Coronavirus

পথে গাড়িতে সংক্রমিতরা, ১ ঘণ্টার অপেক্ষা

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রে জানানো হয়, শুক্রবার গভীর রাতেই সেখানে ৬ জন সংক্রমিত করোনা রোগীকে মাটিগাড়ার করোনা হাসপাতালে সরানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৮
Share:

পিটিআইয়ের তোলা প্রতীকী ছবি।

যত কাণ্ড শিলিগুড়িতে।

Advertisement

এর আগে এখানেই উত্তরবঙ্গের প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। সেই দেহ বার করা থেকে শুরু করে দাহ পর্যন্ত বিস্তর হ্যাপা পোহাতে হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এ বারে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে করোনা সংক্রমিত রোগীদের মাটিগাড়ার বিশেষ করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া নিয়ে হুলুস্থুল হয়ে গেল। দীর্ঘক্ষণ বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হল সংক্রমিত ভর্তি অ্যাম্বুল্যান্সকে। হাসপাতালের কর্মীদের বিরুদ্ধে ওই রোগীদের পথ আটকানোর অভিযোগও উঠল। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল সূত্রে জানানো হয়, শুক্রবার গভীর রাতেই সেখানে ৬ জন সংক্রমিত করোনা রোগীকে মাটিগাড়ার করোনা হাসপাতালে সরানো হয়। শনিবার সন্ধ্যায় বাকি ৪ সংক্রমিতকেও নিয়ে যাওয়া হয় ওই হাসপাতালে। অভিযোগ, তখন মাটিগাড়ার সেই হাসপাতালের লোকজন জানিয়ে দেন, এঁদের আনা হবে বলে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। তাই তাঁরা ঢুকতে দিতে পারবেন না। এর পর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চার করোনা আক্রান্তকে রাস্তার উপর গাড়ির মধ্যে অসহনীয় অবস্থায় বসে থাকতে হয় বলে দাবি। তাঁরা কাউকে না-পেয়ে গাড়ির চালককেই বারবার ব্যবস্থা নিতে বলেন। কিন্তু গাড়িচালক কিছুই করতে পারেননি। মাটিগাড়ার ওই হাসপাতালের পক্ষ নিয়ে কিছু স্থানীয় বাসিন্দাও সক্রিয় হন বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্য দফতর বা কেউ দায়িত্ব না নিলে এ ভাবে গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন চালকও। পরে মাটিগাড়া থানা থেকে পুলিশ গিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতরের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে করোনা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। তার পরে রোগীদের ভিতরে ঢোকানোর ব্যবস্থা হয়।

Advertisement

মেডিক্যাল কলেজের তরফে জানানো হয়, রোগী পাঠানোর সময় তাঁরা সমস্ত তথ্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছিলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্যকে ফোন করা হলে তিনি কিছু জানাতে চাননি। এই চূড়ান্ত অব্যবস্থায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে কেন সমন্বয় নেই, উঠেছে সেই প্রশ্নও। এমনকি, জেলায় করোনা নিয়ে দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা ফোন ধরতে চান না বলেও পুলিশ এবং বাসিন্দাদের একাংশ দাবি করেছেন।

মাটিগাড়ার হাসপাতালের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেখানকার চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ করোনা আক্রান্তদের পরিষেবার কাজ করবেন না বলে জানিয়ে ইস্তফা দেন। স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন গিয়ে তাঁদের বুঝিয়ে কয়েক জনকে কাজে রাজি করান।

আক্রান্তরা সকলেই কালিম্পঙের বাসিন্দা। সম্প্রতি করোনায় যে মহিলা মারা গিয়েছেন, এঁরা হয় তাঁর পরিবারের সদস্য বা পরিচিত। এর আগেও তাঁদের রাখা, খাবারের অব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সোশ্যাল মিডিয়াতেও হইচই হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন করোনা হাসপাতাল লাগোয়া হিমাঞ্চল বিহার আবাস প্রকল্পের জায়গায় পাহাড়িয়া ভবনে এসেছিলেন মোর্চার সভাপতি বিনয় তামাং। স্থানীয় আবাসিকরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে জানাতে চান, এখানে পাহাড় থেকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের আনা হচ্ছে কি না? তাঁরা এ ধরনের রোগীদের এখানে রাখতে দেবেন না বলে এ দিন বিকেল থেকে আবাসন প্রকল্পের বিভিন্ন জায়গায় ঢোকার গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন