ছবি: রয়টার্স
ভিন্ রাজ্য থেকে আগতদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে জেলা প্রশাসন। কে অন্য রাজ্য থেকে এসেছেন, তা বুঝতে হাতে সিল লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে থাকছে ইংরেজিতে বড় হরফে লেখা থাকছে এইচকিউ। অর্থাৎ হোম কোয়রান্টিন। তাঁদের বাড়িতেও সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে হোম কোয়রান্টিন লেখা পোস্টার। যাতে থাকছে হেল্প লাইন নম্বরও। মঙ্গলবার থেকে উত্তর দিনাজপুরে এমনই নিয়ম চালু করল জেলা প্রশাসন। এ বার থেকে হাতে সিল দেখলেই কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেন উত্তর দিনাজপুরের বহু বাসিন্দা। সম্প্রতি অন্য রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের জেলা প্রশাসনের তরফে হোম কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, অনেকেই নিয়ম মানছেন না। কড়া ব্যবস্থা নিতে তাই এই পদক্ষেপ বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। নিয়ম ভাঙলে নিয়ে যাওয়া হবে সরকারি হোম কোয়রান্টিনে।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, চোপড়া ও ইটাহার ব্লকের বেশ কিছু বাসিন্দা দিল্লি, মুম্বই, কেরল, বেঙ্গালুরু থেকে ফিরেছেন। কেউ নির্মাণ শ্রমিক, কেউ বা হোটেল-রেস্তরাঁয় কাজ করেন। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত সাতদিনে অন্য রাজ্য থেকে এই জেলায় ফিরেছেন কয়েক হাজার মানুষ। তাতেই উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের ১৪ দিন নজরদারিতে থাকতে হবে বলে জানানো হয়ছে। কারও শরীরে করোনা উপসর্গ মিললে পাঠানো হবে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আরএন প্রধান বলেন, “ভিন্ রাজ্য থেকে আগতদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সন্দেহজনকদের সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন রাখা হচ্ছে। সকলের ইতিহাস নথিভুক্ত করা হচ্ছে। তাঁরা কোথায় কাজ করতেন, কোথায় বেড়াতে গিয়েছিলেন, কী ধরনের মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন, কোন ট্রেন, বিমান বা বাসে ফিরেছেন— এর পাশাপাশি তাঁদের যোগাযোগ নম্বরও নেওয়া হচ্ছে।“
এ দিকে অভিযোগ, চোপড়া, ইসলামপুর, গোয়ালপোখর চাকুলিয়ায় ভিন্ রাজ্য থেকে আসা অনেকে তথ্য গোপন করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। হুমকিও দিচ্ছেন। সূত্রের খবর, আশাকর্মী, ব্লক প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিয়ম মানতে বলছেন। তবে, এই পরিস্থিতিতে এইচকিউ সিলের মতো কড়া নির্দেশই কাজে আসবে বলে অনুমান প্রশাসনের। বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, এমন কারও হাতে স্বাস্থ্য দফতরের এইচকিউ সিল দেখলেই হেল্প লাইন ও পুলিশে খবর দিতে বলা হয়েছে। কেউ নিয়ম মানছেন না দেখলে পুলিশ তাঁকে সরকারি কোয়রান্টিনে পাঠাবে। এমনকি, ভিন্ রাজ্য থেকে আগতদের বাড়িতে পোস্টারে কোয়রাণ্টিনে থাকার সময়সীমা উল্লেখ করে বাধ্যতামূলক ভাবে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “এমন জটিল পরিস্থিতে এই ব্যবস্থা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।“