আঁধারে আলো নাকি আলোয় আঁধার
Coronavirus

মোম পুড়তেই শব্দবািজর ধুম

প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেখানে আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন করেছিলেন সেখানে কেন শব্দবাজি ফাটানো হল?

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৯:১৪
Share:

ফাইল চিত্র

জনতা কার্ফুর দিন থালাবাটি বাজিয়ে শুরু হয়েছিল মিছিল। রবিবার বাজি-পটকা হাতে রাস্তায় নেমে পড়ল জনতা। এ দিন রাত ৯টার পরে এমনই দৃশ্য দেখল কোচবিহার। প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিলেন এলাকার তৃণমূলের একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেখানে আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন করেছিলেন সেখানে কেন শব্দবাজি ফাটানো হল? শব্দবাজি ফাটানো আইনত নিষিদ্ধ। তার পরেও তা কী ভাবে মজুত করা হল? সেগুলো ফাটানোর সময়েই বা পুলিশ কী করছিল? অনেকের অভিযোগ, লকডাউনে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সেখানে বাজি নিয়ে রাস্তায় কারা ও কী কারণে নামল তা খতিয়ে দেখা হোক।

তৃণমূল-বিজেপি দুই দলই বাজি ফাটানোর বিরোধিতা করেছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “দেশের এই বিপদের সময় আনন্দ-উৎসব ঠিক নয়। যে কোনও দিন প্রদীপ জ্বালিয়ে করোনায় মৃতদের শ্রদ্ধা জানানো যেতেই পারে। কিন্ত শব্দবাজি ফাটিয়ে হই-হুল্লোড় ঠিক নয়।”

Advertisement

বাড়ির আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে শামিল হন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি মালতী রাভা। তিনি বলেন, “সবাই প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়েছে। কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী বাজি ফাটিয়েছে। এটা ঠিক নয়। এ ভাবে শব্দদূষণ কোনও ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।”

এ দিন সকাল থেকেই প্রধানমন্ত্রীর ডাকা কর্মসূচি পালন করতে আসরে নামেন অনেকেই। মোমবাতি কিনতে ভিড় হয় একাধিক মুদির দোকানে। মাটির প্রদীপ কিনতেও একাধিক জায়গায় চোখে পড়ে ভিড়। রাত ৯ টা বাজার পাঁচ মিনিট আগেই একাধিক বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানো হয়। ৯টাতেই বন্ধ করে দেওয়া হয় আলো। অনেক বাড়িতেই অবশ্য টর্চলাইট এবং মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে চলতে থাকে উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি। এমনকি থালা বাজানোও শুরু হয় বহু এলাকায়।

দিনহাটায় বাড়ির আলো না নেভালেও প্রদীপ জ্বালানো হয় তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ ঘোষের বাড়িতে। তিনি বলেন, “অজ্ঞাত এক শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সেই যুদ্ধের কমান্ডার হলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই কমান্ডারের আবেদনেই সাড়া দিয়ে প্রদীপ জ্বালানো হয়েছে।”

কোচবিহার জেলা নেতাদের দাবি, এ দিন কেউ বুঝে, কেউ না বুঝে আলো জ্বালিয়েছেন। কেউ কেউ মনে করেছেন, প্রদীপ জ্বালালেই বুঝি করোনাভাইরাস চলে যাবে। তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জেও একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। বহু মানুষ লকডাউন উপেক্ষা করেই রাস্তায় নামেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন