প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে এক ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ মিলল সলসলাবাড়ি এলাকায়। পরিবারের দাবি, কয়েক দিন ধরে তিনি করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা করছিলেন। সেই কারণে তিনি গলায় দড়ি দিয়ে থাকতে পারেন। পুলিশ অবশ্য ওই ব্যক্তিকে মানসিক ভাবে অসুস্থ বলে জানিয়েছে। কিন্তু পড়শিরা তা মানতে চাননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সুমিত ভৌমিক (৬২)। রাজমিস্ত্রি ওই ব্যক্তির বাড়িতে তাঁর স্ত্রী ছাড়াও চার ছেলে রয়েছেন। বৃদ্ধের বড় ছেলে মানিক ভৌমিকের বক্তব্য, “বাবা সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিলেন। বাড়িতে বা বাইরে কারও সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে বাবার অশান্তি বা ঝামেলা ছিল না। কিন্তু গত রবিবার জনতা কার্ফুর দিন থেকে বাবার মনে চিন্তা বাড়তে শুরু করে। বারবার টিভিতে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত খবর দেখতেন। আমরা বোঝালেও কাজ হয়নি। উল্টে বাড়ির বাইরে বের হলেই পুলিশ মারবে বলে আমাদের সতর্ক করতেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে, এই আশঙ্কায় রাস্তার দিকের দরজা-জানলাও বন্ধ করে রাখতেন।”
বৃদ্ধের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, শুক্রবার দিনভর খুব বেশি কথাও বলতে দেখা যায়নি তাঁকে। সন্ধ্যার পর আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। দীর্ঘক্ষণ সন্ধান না পেয়ে খোঁজ শুরু করে বাড়ির লোকেরা। তখনই বাড়ির পাশে একটি গাছে তাঁর ঝুলন্ত দেহটি দেখতে পান তাঁরা। মানিকের দাবি, “করোনাভাইরাসের আতঙ্কেই বাবা আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হচ্ছে।” রাতে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, গত দুই-তিন বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন ওই বৃদ্ধ। তার জন্যই হয়তো তিনি আত্মহত্যা করেছেন। চাপড়ের পাড়-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা সুজাতা দাস বলেন, “ওই বৃদ্ধ মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন। কিন্তু জনতা কার্ফুর দিন থেকে তাঁর মনে করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ঢুকে যায়। আমরা নিশ্চিত, সেই আতঙ্কেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।”
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, বৃদ্ধের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা চলছে।