রায়গঞ্জের কোভিড হাসপাতালে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন। নিজস্ব চিত্র।
করোনা সংক্রমণ রুখতে চিকিৎসকেরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন করছেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর থেকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেমন, বেশ কিছুদিন ধরে লালারস পরীক্ষার জন্য মেডিক্যালের ফিভার ক্লিনিকের পাশের একমাত্র কাউন্টারের সামনে বাসিন্দাদের ভিড় উপচে পড়ছে। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে সেই ভিড় থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা চরমে উঠেছে।
এরই প্রেক্ষিতে ভিড় এড়াতে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ কেন লালারস পরীক্ষার কাউন্টার বাড়াচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে, রবিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় মেডিক্যালের কোভিড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের বাড়ি ইটাহার ও হেমতাবাদে। এদিকে, গত ৭ মে একদিনে উত্তর দিনাজপুর জেলায় ৩৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। করোনা আবহে এর আগে একদিনে জেলায় এতজন বাসিন্দা আক্রান্ত হননি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। সবমিলিয়ে ওইদিন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ১৬৫ জন। তাঁদের মধ্যে ওইদিন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৯৪ জন। ৭ মে পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মেডিক্যালের সহকারী সুপার সৌমাশিস রাউতের বক্তব্য, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে প্রতিদিনই একটি কাউন্টারের সামনে কয়েকশো বাসিন্দা লালারস পরীক্ষা করানোর জন্য ভিড় করছেন। মেডিক্যালের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাসিন্দাদের সামাজিক দূরত্ব রেখে লাইনে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিলেও তাঁরা তা শুনছেন না।’’ তাঁর দাবি, ভিড় এড়াতে কাউন্টার বাড়ানোর ব্যাপারে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে ব্যবস্থা করবে।
মেডিক্যাল সূত্রে খবর, প্রতিদিন ল্যাবরেটরিতে আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে জেলার সাতশো থেকে আটশো জন বাসিন্দার লালারস পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে প্রায় ২০০ জন বাসিন্দা কাউন্টারে এসে লালারস দেন। বাকি লালারস জেলা স্বাস্থ্য দফতর জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পাঠায়।
রায়গঞ্জের দেবীনগর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক ভীমনারায়ণ মিত্র বলেন, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আবহে প্রতিদিন মেডিক্যালের ফিভার ক্লিনিকের পাশের কাউন্টারে বাসিন্দাদের ভিড় বাড়ছে। মেডিক্যালের তরফে বাসিন্দাদের সামাজিক দূরত্ব রাখার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সেই ভিড় থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে পারে।’’ তাঁর পরামর্শ, ভিড় এড়াতে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দ্রুত লালারস পরীক্ষার কাউন্টার বাড়ানো উচিত।’’