কোয়রান্টিনে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তা

তালিকায় জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকও রয়েছেন। 

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৬:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা রোগীদের সংস্পর্শে আসায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল ও জেলা পুলিশের দুই শীর্ষকর্তার পাশাপাশি ২৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠাল আলিপুরদুয়ার স্বাস্থ্য দফতর। তালিকায় জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকও রয়েছেন।

Advertisement

কিন্তু দিল্লির মতো জায়গা থেকে ফেরার পর কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকা চার আক্রান্তের একজনকে স্বাস্থ্য কর্তারা কী করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আসার অনুমতি দিলেন, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। খোদ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের এমন সিদ্ধান্তের জন্যই জেলা হাসপাতালের শীর্ষ কর্তা সমেত কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিনে যেতে হল।

বৃহস্পতিবার রাতে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার বাসিন্দা চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। ওই রাতেই তাঁদের শিলিগুড়ির করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার ওই চারজন ও এক কিডনি রোগী দিল্লির এমস থেকে একই অ্যাম্বুল্যান্সে বারবিশায় আসেন। সেখানেই তাঁদের প্রত্যেককে একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়। করোনায় আক্রান্ত ওই চারজনের দলে কিডনি রোগীর বাবাও রয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার ওই ব্যক্তি তাঁর ছেলের চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আসেন। সেখানে হাসপাতালের শীর্ষ কর্তা ও এক চিকিৎসকের পাশাপাশি এক স্বাস্থ্য কর্মীর সংস্পর্শেও আসেন তিনি। এই অবস্থায় ওই ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পর হাসপাতালের শীর্ষ কর্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়। আর চিকিৎসক যান হোম কোয়রান্টিনে।

Advertisement

আর এই ঘটনাকে ঘিরেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বেশ কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তপসিখাতায় করোনার সারি হাসপাতালে চিকিৎসা চালু হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, এই অবস্থায় দিল্লির মতো একটি জায়গা থেকে ফেরা কিডনির রোগী ও তাঁর বাবাকে কী করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে আসার অনুমতি দেওয়া হল? তাও আবার কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে!

যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই কিডনি রোগীকে তাঁর বাবাই দেখভাল করছিলেন। তাছাড়া মঙ্গলবার যেমন কিডনি রোগীর বাবার করোনা ধরা পড়েনি, তেমনি তাঁর শরীরে তেমন কোনও উপসর্গও ছিল না। তাই ছেলের চিকিৎসার প্রয়োজনে তাঁকেও হাসপাতালে আসার অনুমতি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রিপোর্ট আসার পর ওই ব্যক্তির কিডনি রোগী ছেলেকে অবশ্য তপসিখাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সেখানে তাঁর ডায়লিসিসও হয়।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বারবিশায় ধরা পড়ার পর জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা ও কয়েকজন পুলিশকর্মী করোনা রোগীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। একই ভাবে কোয়রান্টিন সেন্টারে কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীও তাঁদের সংস্পর্শে আসেন। তাঁদের সকলকেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন