VRDL

নাইসেড টপকে নজির উত্তরের

সরকারি হিসেবেই এখানে ৯৩৬০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে নাইসেডে পরীক্ষা হয়েছে ৮৬২৮টি।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৬:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা পরীক্ষায় রাজ্যে নজির গড়ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক ল্যাবরেটরি। গত ২৯ মার্চ থেকে এই ভাইরোলজির ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা শুরু হয়। দেরিতে দৌড় শুরু করেও এখন তারা টেক্কা দিচ্ছে রাজ্যের অন্যতম করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার কেন্দ্র কলকাতার নাইসেড’কে। বুধবার পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের ১৭টি ল্যাবরেটরিকে পিছনে ফেলে করোনা সংক্রমণ নির্ণয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লালারসের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এই ল্যাবরেটরিতে। সরকারি হিসেবেই এ দিন পর্যন্ত এখানে ৯৩৬০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে নাইসেডে পরীক্ষা হয়েছে ৮৬২৮টি।

Advertisement

রাজ্যে গোড়ায় শুধু নাইসেডেই পরীক্ষা শুরু হয়। নাইসেডের মতো এখানে অত্যাধুনিক অটোমেটেড রিয়্যাল টাইম পিসিআর যন্ত্র নেই। এই যন্ত্রে দিনে দেড় হাজার পরীক্ষা করা সম্ভব। এখানে যে দুটি রিয়্যাল টাইম পিসিআর যন্ত্র রয়েছে তা দিয়ে ১২০টি করে নমুনা পরীক্ষা একবারে হতে পারে। তা-ও সময় লাগে ৭-৯ ঘণ্টা। যন্ত্রের অভাবের মধ্যেও ল্যাবরেটরির রিসার্চ সায়েন্টিস্ট, টেকনিশিয়ানরা দিনরাত এক করা পরিশ্রম করে যত বেশি সংখ্যক নমুনা পরীক্ষার চেষ্টা করছেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে যত বেশই নমুনা পরীক্ষা করা যাবে ততই ভাল। শুরুতে দিনে ১০টি, ২০টি করে নমুনা পরীক্ষা হত। সপ্তাহখানেকের মধ্যে তা বাড়িয়ে দৈনিক ১২০-১৫০টি করে পরীক্ষা শুরু হয়। সম্প্রতি তা বাড়িয়ে ৫০০ করা শুরু হয়।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এই ভিআরডিএল-এর প্রিন্সিপ্যাল এগজ়ামিনার তথা মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অরুণাভ সরকারের নেতৃত্বে ভিআরডিএলের কর্মীরা কার্যত নজির গড়েছেন। অয়ন চক্রবর্তী, শ্যাম সুন্দর, মধুমিতা, সঞ্জিতদের মতো রিসার্চ সায়েন্সটিস্ট এবং টেকনিশিয়ান মিলিয়ে ১১ জন রয়েছেন। চিকিৎসক ফ্যাকালটি রয়েছেন আরও অন্তত ৫ জন। ল্যাবরেটরির কর্মীদের কথায়, এখন কার্যত সময় মতো ঘুম নেই, খাওয়া নেই। ঘর-বাড়ি, পরিবারের দিকে নজর দেওয়ার সময় নেই। কেউ ভোরে বা সকালে ল্যাবরেটরিতে ঢুকছেন, কাজ শেষ হতে মধ্য রাত।

Advertisement

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘দিনরাত এক করে কাজ করছেন ওই ল্যাব টেকনিশিয়ান, কর্মী, আধিকারিকরা। আর কী কী ভাবে ল্যাবরেটরির পরিষেবা উন্নত করা যায়, সে জন্য এদিন তাদের নিয়ে আলোচনাও করেছি।’’ হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব, সুপার কৌশিক সমাজদাররাও জানান, এই পরিস্থিতিতে ল্যাবরেটরির কর্মীদের ভূমিকা প্রশংসার যোগ্য।

উত্তরবঙ্গে বেশিরভাগ জেলাই এখন করোনা সংক্রমণের আওতায় চলে আসায় লালারসের নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজনে র্যাপিড কিট প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ভুল কিট আমদানি করায় তা ফেরত পাঠাতে হয় কেন্দ্রীয় সরকারকে। তার উপর ভিন রাজ্য ফেরত শ্রমিকেরা বুধবার থেকে বিপুল সংখ্যায় ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে আশার কথা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ভিআরডিএল’-তে অটোমেটেড রিয়্যাল টাইম পিসিআর যন্ত্র আসার কথা। তাতে প্রতিদিন আড়াই হাজার নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্য রাখা হবে বলে জানান তিনি।

বুধবার ল্যাব জীবাণু মুক্তকরণ হয়। তবু কিছু নমুনা পরীক্ষাও হয়েছে। এদিন থেকে জরুরি ভিত্তিতে করোনা নির্ণয়ে লালা পরীক্ষার জন্য টিবি সংক্রমণ পরীক্ষার ল্যাবরেটরিতে ট্রু ন্যাপ এবং সিবি ন্যাপ যন্ত্রে পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন