রাস্তার ধারেই মোমবাতি জ্বলল বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ যেন ‘অকাল দীপাবলি’।
বাড়ি বাড়ি জ্বলল মোমবাতি, দেদার ফাটল শব্দবাজি, উড়ল ফানুস। পাশাপাশি গৌড়বঙ্গের তিন জেলাতেই ‘জনতা কার্ফু’র আদলে বাজল শাঁখ-কাঁসর-ঘণ্টা, বাসনপত্রও। সঙ্গে কোথাও স্লোগান উঠল ‘গো করোনা গো’, ‘ভারতমাতা কী জয়’।
লকডাউনের বাজারে নিষিদ্ধ শব্দবাজি এত এল কোথা থেকে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিন জেলার বাসিন্দাদের একাংশ। বাজির শব্দ শুনে অনেক এলাকায় পুলিশ নজরদারিতে বের হয়। অনেকে এলাকার বাসিন্দারা বিদ্যুতের গ্রিড বসে যাওয়ার আশঙ্কায় ঘরের আলোর পাশাপাশি ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনার, টেলিভিশনও বন্ধ করে রাখেন।
মালদহের শহর থেকে গ্রাম— সব জায়গাতেই ঘরের আলো নিভিয়ে অনেক বাড়িতে জ্বলে মোমবাতি, প্রদীপ। তবে বেশিরভাগ রাস্তাতেই পথবাতি নেভেনি। তবে কয়েকটি এলাকায় পথবাতি কোনও ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলে এলাকাবাসীর দাবি। ইংরেজবাজার শহরের গৌড় রোড, মকদমপুর রোডের দু’ধারের বাড়িগুলিতে ৯টার পরে যেন কালীপুজোর রাতের ছবি। বাড়ির বারান্দা, উঠোনে মুখে মাস্ক পরে মোমবাতি জ্বালাতে দেখা যায় আট থেকে আশির মানুষকে। লকডাউন ভেঙে অনেকে নামেন রাস্তাতেও। ভিড় জমে মোড়ে মোড়ে। কয়েক জায়গায় সাউন্ডবক্সে বাজতে শোনা যায় দেশাত্মবোধক গানও। চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশকেও মোমবাতি জ্বালাতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা মেনে ঘরে, রাস্তায় আলো জ্বালেন বিজেপির নেতা-কর্মীরাও। উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মূর বাড়ির ছাদে প্রদীপের আলোয় দিয়ে সাজানো হয় ভারতের মানচিত্র।
রাত তখন ৯টা ২০। নির্ধারিত সময়ের মিনিটদশেক পরেও শব্দবাজির দাপট কমেনি বালুরঘাটের অনেক এলাকাতেই। সঙ্গে ছিল শঙ্খধ্বনিও। শহরবাসীর একাংশের বক্তব্য, চারপাশে যেন ছিল উৎসবের মেজাজ। কয়েকটি বাড়িতে দেখা যায় টুনিবাল্বের রোশনাইও। শহরের ডানলপ মোড়, বিশ্বাসপাড়া, সাধনা মোড়— জেলার অন্য প্রান্তের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন এলাকার ছবি ছিল একই।
রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহারেও বেশিরভাগ বাড়িতে রাত ৯টার কয়েক মিনিট আগেই আগেই নিভে যায় আলো। ছাদে উঠে মোবাইল ফোনের ফ্লাশলাইট দেখান অনেকে। অনেকে জ্বালান মোমবাতি। সঙ্গে দেদার ফাটে রকেট, তুবড়ি, চরকা। শব্দবাজির সঙ্গে ছিল প্রবল হাততালিও। ইসলামপুর, চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর, চোপড়ার একাংশে অন্য এলাকার তুলনায় কম আলো জ্বলে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)