Coronavirus

সেলাইয়ের কাজ নেই, ফুরিয়েছে টাকা, বাচ্চাদের খাওয়াব কী!

স্বামী মারা যাওয়ায় সেলাই মেশিনই উপার্জনে অস্ত্র হল।জামাকাপড় সেলাই করে সামান্য উপার্জনে কোনও মতে চলে সংসার। লকডাউনে হাতে কোনও কাজ নেই। ফুরিয়েছে টাকাও।

Advertisement

নিতু জয়সওয়াল

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৭:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি

২১ দিনের লকডাউন সব যেন ওলটপালট করে দিল।

Advertisement

জামাকাপড় সেলাই করে সামান্য উপার্জনে কোনও মতে চলে সংসার। লকডাউনে হাতে কোনও কাজ নেই। ফুরিয়েছে টাকাও। পড়শিরা সাহায্য করছেন। তা দিয়েই এই ক’দিন দুই ছেলের মুখে খাবার তুলে দিয়েছি। এর পরে যে কী ভাবে চলবে ভেবেই রাতে ঘুম আসছে না।

২০০১ সালে বিয়ে হয় আমার। টোটো চালাতেন স্বামী। ওই টাকায় আর পাঁচটা পরিবারের মতোই দিন কাটছিল। ঘরের কাজের পরে অবসর সময়ে বাড়ির পুরনো জামাকাপড় সেলাই করতে একটি সেলাই মেশিন কিনেছিলাম। ২০১৭ সালের মে মাসে আমার স্বামী সুভাষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ভেবে পাচ্ছিলাম না দুই ছেলেকে নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাব। ওই সেলাই মেশিনই যে পরিবার চালানোর প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠবে তা ভাবতে পারিনি। পুরনো জামাকাপড় সেলাইয়ের জন্য পাড়ার বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসি। প্রথম দিকে অস্বস্তি হলেও দুই ছেলের কথা ভেবে হাতের কাজের এই পথই বেছে নিতে বাধ্য হই। এক জন দু’জন করে সেলাইয়ের কাজও বাড়তে থাকে।

Advertisement

আমার বড় ছেলে শুভম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। ছোট ছেলে সৌয়ম এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। স্বামীর মৃত্যুর পরে সেলাইয়ের কাজ করে দুই ছেলের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার কোনও মতে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় লকডাউনে বাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। কাপড় সেলাই করাতে কেউ আসছেন না। পাড়ার কাউকে জামাকাপড় সেলাইয়ের কথা বললেও সংক্রমণের আশঙ্কায় সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মঙ্গলবার চাল, আলু, ডাল ও তেল দিয়েছেন। সে সব শেষ হওয়ার পরে কী হবে। স্বামী বেঁচে থাকলে এমন বিপর্যয়ে দু’বেলার খাবার নিয়ে হয়তো এত চিন্তা করতে হত না। কিন্তু এখন তো ছেলেদের একমাত্র ভরসা আমিই। লকডাউনে কাজ না থাকায় আমিই তো এখন অসহায়। ওদের জন্য কী করব। ভাবতেই চোখে জল আসছে।

অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন