Coronavirus

এত বাজি এল কী ভাবে, প্রশ্ন

মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে উলুধ্বনির সঙ্গে প্রথমে কাসর, ঘণ্টা, শাঁখ বাজল। সঙ্গে অনেক জায়গায় শোনা গেল ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’-এর ধ্বনি।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৮:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি

হাততালির পরে মোমবাতি। করোনা রুখতে যে লড়াই চলছে তার পাশে থাকার বার্তা জানাতে ঘরের আলো নিভিয়ে মোমবাতি, টর্চ জ্বালাতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাতে সাড়া মিলল শিলিগুড়িতে। পরিস্থিতি এমন হল যে করোনার ভয়, বিধি-নিষেধকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে রাস্তায় নেমে যেন দীপাবলি পালন হল শিলিগুড়িতে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা মতো রবিবার রাত ৯টা বাজতেই অন্ধকার হল শহর শিলিগুড়ি। অধিকাংশ বাসিন্দারা বাড়ি, গ্যারাজ, বহুতলের আলো নিভিয়ে দেন। তারপরেই যেন শুরু শব্দের তান্ডব। অনেকে অবশ্য বাড়ির আলো জ্বালিয়ে রেখেই মোমবাতি, টর্চ জ্বালিয়েছিল।

Advertisement

মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালিয়ে উলুধ্বনির সঙ্গে প্রথমে কাসর, ঘণ্টা, শাঁখ বাজল। সঙ্গে অনেক জায়গায় শোনা গেল ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘ভারত মাতা কি জয়’-এর ধ্বনি। আর শুরু হল শব্দবাজির দাপট। বহুতলগুলির ছাদে ফাটল দেদার আতসবাজি, শব্দবাজি, পটকা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, লকডাউনের শহরেও যে লুকিয়ে চুরিয়ে দেদার শব্দবাজি বিক্রি হয়েছে তা বোঝা গেল রবিবার রাতে। লকডাউনের বাজারে পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারি নিয়েও উঠল প্রশ্ন। যদিও শিলিগুড়ি পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও আধিকারিক এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

এ দিন রাস্তায় রীতিমতো মশাল নিয়ে নেমে পড়লেন অনেকে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় চলল বাইক, স্কুটির দাপট। একলাফে ফের শহরে বাড়ল শব্দ, বায়ু দূষণের মাত্রাও। রাত সাড়ে ন’টাতেও বাজি, কাঁসর বা শাঁখ থামেনি বহু এলাকায়। প্রবীণ বাসিন্দাদের অনেকের কটাক্ষ, ‘‘লকডাউন, করোনা মোকাবিলা না কি ভারত বিশ্বকাপ জিতল বা মঙ্গলগ্রহে পৌঁছল তা বোঝা দায়।’’

Advertisement

আতসবাজি, শব্দবাজি পুড়েছে শিলিগুড়ির, হাকিমপাড়া, পাকুড়তলা, সেবক রোডের বিভিন্ন এলাকায়। কেউ মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালালেন বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে। অনেকে টর্চ জ্বালিয়ে, মোবাইলের আলো জ্বালিয়েও প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিলেন। তবে সবাইকে করোনা মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ করার যে কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পরিবর্তে বিষয়টি বিজয় উল্লাসে পরিণত হয়। জাতীয় সঙ্গীত গাইতেও দেখা গেল অনেককে।

নির্দিষ্ট সময়ে মোমবাতি, প্রদীপের চেয়ে বেশি চোখে পড়েছে মোবাইলের আলো। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে টর্চের আলো। বর্ধমান রোড, সেবক রোডের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকানগুলিতে গত দু’দিনে টর্চও দেদার বিক্রি হয়েছে। রাত

ন’টার পর থেকেই ঘরের বাইরে সেগুলি নিয়ে এসে পড়েন

বাসিন্দারা। দুই মাইল থেকে হায়দারপাড়া, ইসকন রোড, মহানন্দাপাড়া, খালপাড়া, বিদ্যাসাগরপল্লি, দেশবন্ধুপাড়া, মিলনপল্লি, এনজেপি, বাবুপাড়া, শক্তিগড়, সুভাষপল্লি, কলেজপাড়া, রবীন্দ্রনগর, পূর্ব বিবেকানন্দপল্লির মতো শহরের অধিকাংশ জায়গায় একই ছবি দেখা গিয়েছে। মহাকালপল্লিতে উড়েছে ফানুস, ফেটেছে রঙ বেরঙের আতস বাজি ও শব্দবাজি। প্রায় আধঘণ্টা ধরে

চলেছে আলো আর বাজির যুগলবন্দি।

বাড়ির ছাদে ফেটেছে বাজি আর কার্নিশ, ব্যালকনিতে সার দিয়ে জ্বলেছে মোমবাতি। কারও কারও বাড়ির সামনে জাতীয় পতাকা দেখা গিয়েছে। দোরগোড়ায় বেরিয়ে প্রদীপ-নিজস্বীও উঠেছে হাতিমোড়ে। বাতি জ্বালানোর ছবি তুলতে, মোবাইলে টর্চ জ্বালিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে

পরে অনেক বাইক। গত কয়েক দিনে শিলিগুড়িতে মোমবাতি বিক্রির বাহার ছিল চোখে পড়ার মত। এ দিন তারই প্রকাশ চোখে পড়ল শিলিগুড়ি শহরের বাড়িগুলিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন