করোনা রুখতে আমবাগানে আশ্রয় ৯ শ্রমিকের

ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া অস্থায়ী সেই শিবিরে পরিবার, গ্রামবাসীদের থেকে দূরে দিন কাটাচ্ছেন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের কোতুয়ালির নয় শ্রমিক

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৬:২৫
Share:

নিয়মে: মালদহের কোতুয়ালিতে আমবাগানে থেকে সামাজিক দূরত্ব পালন করছেন একদল যুবক। নিজস্ব চিত্র

হাওড়া থেকে ফিরেছেন নিজেদের গ্রামে। কিন্তু বাড়িতে ঢোকেননি। করোনা-আবহে কালিন্দ্রী নদীর তীরের আমবাগানে নিজেরাই তৈরি করেছেন ‘কোয়রান্টিন’ শিবির। ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া অস্থায়ী সেই শিবিরে পরিবার, গ্রামবাসীদের থেকে দূরে দিন কাটাচ্ছেন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের কোতুয়ালির নয় শ্রমিক। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন গ্রামবাসী ও স্থানীয় ক্লাব। স্বেচ্ছায় ‘বনবাসে’ থাকা শ্রমিকদের দু’বেলা খাবারের জোগাড় করছেন তাঁরাই।

Advertisement

হাওড়ায় শ্রমিকের কাজ করতেন সতীচড়া গ্রামের ন’জন। লকডাউনে কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন তাঁরা। হাওড়ায় ১৪ দিন কোয়রান্টিনেও ছিলেন। পকেটে টাকা ফুরনোয় যোগাযোগ করেছিলেন ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষের সঙ্গে। ২৫ এপ্রিল নীহারেরই উদ্যোগে হাওড়া থেকে গ্রামে ফেরেন চিণ্টু হালদার, সিণ্টু হালদাররা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে ন’জনেই স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেন।

বাড়িতে এক-দুটো ঘর। সেখানে হোম কোয়রান্টিনের নিয়ম মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই বাড়িতে না ঢুকে কালিন্দ্রী নদীর ধারে আমবাগানে শিবির গড়েন সিণ্টুরা। বাঁশ, ত্রিপল দিয়ে তৈরি করেন ছাউনি। গ্রামবাসীদের তরফে প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য চৌকি, মশারির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। রান্নার জন্য দেওয়া হয় গ্যাস, ওভেনও। দেওয়া হয় খাদ্যসামগ্রীও।

Advertisement

সিণ্টু বলেন, ‘পরিবার, গ্রামের মানুষের কথা ভেবে স্বেচ্ছায় বাগানে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আরও সপ্তাহখানেক থাকার পরে ফের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে বাড়ি ফিরব।” গ্রামবাসী নীলকমল সরকার, বাপি হালদাররা বলেন, ‘‘অনেক গ্রামে রাতের অন্ধকারে পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়িতে ঢুকছেন। বাঁশের ব্যারিকেড দিতে হচ্ছে। আমাদের

গ্রামের শ্রমিকেরা নিজেরাই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে

বাগানে থাকছেন।”

নীহাররঞ্জন বলেন, ‘‘ওই যুবকদের সচেতনতা সত্যই প্রশংসনীয়। তবে সরকারি কোয়রান্টিনে রাখার বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন