রতুয়ায় রেশন ডিলারের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
পণ্য বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রেশন ডিলারের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন উপভোক্তারা। শনিবার মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের ভাদো গ্রাম পঞ্চায়েতের বিহারি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। সকাল থেকে বিক্ষোভ চলার পর বেলা ১টা নাগাদ পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘেরাও তুলে নেওয়া হয়। খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বাসিন্দারা এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রতুয়া-১ ব্লকের খাদ্য সরবরাহ আধিকারিক রাজীবলোচন সিংহরায় বলেন, “উপভোক্তারা আমাকে কিছু জানাননি। ওঁরা অভিযোগ জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া বাসিন্দাদের কী অভিযোগ, তাও দফতরের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও উপভোক্তা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারি এলাকার ওই রেশন ডিলারের নাম আব্দুল হাকিম। সেখান থেকে রেশনের পণ্য সংগ্রহ করেন বিহারি, বিজলি, ধনিকুজি, রামপুর, মিরকামারি, চাপড়া, কালিয়া ও দুধকুন্ডা-সহ ৮টি গ্রামের মানুষ। ওই ডিলারের অধীনে সাড়ে চার হাজার উপভোক্তা রয়েছেন। তার মধ্যে এপিএল ৩৮৬১ জন, বিপিএল ৫২৬ জন ও অন্ত্যোদয় উপভোক্তার সংখ্যা দেড়শো জন।
উপভোক্তাদের অভিযোগ, চাল, গম, কেরোসিন তেল থেকে শুরু করে চিনি সব পণ্যই বাসিন্দাদের প্রয়োজনের তুলনায় কম দেওয়া হয়। চিনি সরবরাহ নেই জানিয়ে কার্যত তা দেওয়াই হয় না। বছরের পর বছর ধরে উপভোক্তাদের বঞ্চিত করে ওই ডিলার কম পণ্য দিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ। এর পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসে এক উপভোক্তা তথ্য জানার অধিকার আইনে উপভোক্তাদের প্রাপ্য জানতে চেয়ে আবেদন করেন। তার বিস্তারিত বিবরণ জানার পরেই পণ্য কম দেওয়া হচ্ছে জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন উপভোক্তারা। এর পরই এ দিন জোট বেঁধে ডিলারের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁরা প্রথমে পণ্য বিলি বন্ধ করে দেন। তার পর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন কয়েকশো উপভোক্তা। খবর পেয়ে রতুয়া থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
যদিও আব্দুল হাকিম এ দিন বলেন, “পণ্য বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়। যা পণ্য আসে, তার সবটাই নিয়ম মেনে বিলি করা হয়। সরবরাহ অপ্রতুল হলে বাধ্য হয়েই উপভোক্তাদের কম দেওয়া হয়। তদন্ত করলেই তা প্রমাণিত হয়ে যাবে। বাসিন্দারা কেন এ ধরনের অভিযোগ তুলছেন তা বুঝতে পারছি না। স্থানীয় বাসিন্দা জাহান্নুর নিবির পরিবারে সাতটি রেশন কার্ড রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “আমার দু’কেজি ৪০০ গ্রাম গম পাওয়ার কথা। কিন্তু দেড় কেজি করে দেওয়া হচ্ছে। কেরোসিন তেলও প্রতি সপ্তাহেই কম করে দেওয়া হচ্ছে। বিপিএল তালিকাভুক্ত উপভোক্তা মহম্মদ মিনাজুদ্দিন বলেন, “আমাকেও চাল, কেরোসিন তেল কম করে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি ডিলারকে একাধিক বার জানালেও ফল হয়নি।”