•বোঝাই: কোচবিহারের পথে আলুর গাড়ি। নিজস্ব চিত্র
হিমঘর খুলেছে তিন দিন আগে। কিন্তু আলু রাখার ব্যস্ততা নেই। হাত গুটিয়ে বসে আছেন শ্রমিকরাও।
অভিযোগ, ফলন গত বছরকে ছাপিয়ে গেলেও হিমঘরে আলু রাখার বন্ড চেয়েও পাননি বহু কৃষক। অথচ টাকার বিনিময়ে আলুর বন্ড বিক্রি করা হচ্ছে। কোনও গ্রামে বস্তা পিছু ৩০ টাকা। কোথাও একটি বন্ড হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষকদের বঞ্চিত করে ওই বন্ড এক শ্রেণির ফড়েদের হাতে চলে যাচ্ছে। সে কারণেই হিমঘর খুললেও সেখানে ভিড় নেই।
এই অবস্থার মধ্যেও কৃষকরা অবশ্য তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। বুধবারও বনেশবর গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “কোথাও বন্ড বিক্রির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” উত্তরবঙ্গ হিমঘর মালিক সমিতির সম্পাদক মানিক বৈদ বলেন, “তিনদিন আগে হিমঘর খোলা হয়েছে। এখনও সে রকম ভিড় নেই। শ্রমিকরা বসেই থাকছেন। আমাদের হাতে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তালিকা পৌঁছলেই আমরা কাজ শুরু করে দিচ্ছি।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, এ বার কোচবিহারে দশ লক্ষ মেট্রিক টনের উপরে আলু উৎপাদন হয়েছে। পাইকারি বাজারে আলুর দাম কেজি প্রতি দু’ টাকা থেকে তিন টাকায় নেমে গিয়েছে। ফলে লোকসানের মুখে কৃষকরা। হিমঘরে আলু রাখার জন্য প্রায় এক মাস ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কৃষকরা কোনও ভাবেই যাতে বঞ্চিত না হন সে জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে আলুর বন্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। বিজেপির অভিযোগ, কোচবিহারে অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শাসক দলের নেতাদের একটি অংশ টাকার বিনিময়ে বন্ড বিক্রি শুরু করেছে। চকচকার বিজেপির গ্রাম সদস্য অজিত পাল বলেন, “আমাদের কাছে অনেক তথ্য প্রমাণ আছে। প্রশাসনের হাতে সব তুলে দেব।” তৃণমূলের তরফে অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করা হয়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি পরিমল বর্মন বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে সব জায়গায় সমস্যা মেটানো হচ্ছে। দুর্নীতির কোনও ব্যাপার নেই।”