সংঘর্ষে জখম ৬

ডিজের শব্দে পালাল গরু

সরস্বতী পুজো শেষ হলেও থামেনি তারস্বরে ডিজে বক্সের দাপট। সেই ডিজের শব্দ নিয়েই শুক্রবার রাতে গোলমাল বাধল মালদহের বিলাসপুরে। পুজো উদ্যোক্তা ও এক পরিবারের সংঘর্ষে জখম হলেন দু’পক্ষের ছ’জন। মালদহে মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ওই জখমদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

মালদহ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। —নিজস্ব চিত্র

সরস্বতী পুজো শেষ হলেও থামেনি তারস্বরে ডিজে বক্সের দাপট। সেই ডিজের শব্দ নিয়েই শুক্রবার রাতে গোলমাল বাধল মালদহের বিলাসপুরে। পুজো উদ্যোক্তা ও এক পরিবারের সংঘর্ষে জখম হলেন দু’পক্ষের ছ’জন। মালদহে মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ওই জখমদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ওই রাতেই দু’পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার থানার মহদিপুর পঞ্চায়েতের বিলাসপুর গ্রামে বছর দশেক ধরে সরস্বতী পুজোর আয়োজন করে স্থানীয় ‘দাদা ভাই ক্লাব।’ পুজো শেষ হলেও এখনও তাঁদের মণ্ডপে রয়েছে প্রতিমা। অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধে ছটা থেকে তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশ নাচানাচি করছিলেন। সেই সময় ওই গ্রামেরই বাসিন্দা গয়া ঘোষ মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ডিজের শব্দে ভয় পেয়ে গরু গুলি ছুটে পালিয়ে যায়। ক্ষুব্ধ গয়াবাবু ডিজে বন্ধ করতে গেলে পুজো উদ্যোক্তারা বাধা দেন। এই নিয়ে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। গয়াবাবুকে মারধর করতে দেখে ছুটে আসেন তাঁর দাদা মঙ্গল ঘোষ। তাঁকেও মারধর করা হলে দুইপক্ষের মধ্যে হাঁসুয়া, লাঠি নিয়ে শুরু হয়ে যায় সংঘর্ষ। গয়া ও মঙ্গল ঘোষ সহ পুজো উদ্যোক্তাদের চারজন গুরুতর জখম হন। এই ঘটনায় গ্রামজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরে ঘটনাস্থলে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গয়া ও মঙ্গলের শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের কোপ রয়েছে। এ ছাড়া আহত রয়েছেন ভীম ঘোষ, রবি ঘোষ, উত্তম ঘোষ ও গণেশ ঠাকুর।

শনিবার সকালেও হাসপাতালে আহতদের পরিবারের মধ্যে বচসা বাধে। হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষী ও ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। গয়াবাবু বলেন, ‘‘তিনদিন ধরে একটানা ডিজে বক্স বাজিয়েই চলেছে ভীম, রবিরা। বাড়ির গবাদি পশুগুলির সমস্যা হচ্ছে। প্রচণ্ড শব্দে গরুগুলি অসুস্থ হয়ে খাওয়াদাওয়া করছে না। গরু পালন করেই আমাদের সংসার চলে। তাই গরুর যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তা বলতে গেলে হাঁসুয়া নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালায় ক্লাবের ছেলেরা।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা তাঁদের উপরে দায় চাপিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। ভীম ও রবিবাবুর দাবি, ‘‘নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আমরা মাইক বাজাছিলাম। ওরাই মদ্যপ অবস্থায় আমাদের গালিগালাজ করছিল। প্রতিবাদ করলে আমাদের উপরে হামলা চালায়।’’

Advertisement

ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, মাইক ও বক্স বাজেয়াপ্ত করে হয়েছে। এলাকায় পুলিশি টহলদারি চলছে। তবে সরস্বতী পুজোর তিন দিন পরেও কীভাবে এত জোরে ডিজে বক্স বাজছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘মণ্ডপগুলিতে ডিজের ব্যবহারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন