দীপাবলির রাতে নিষিদ্ধ শব্দবাজির তাণ্ডব

আদালতের রায় ও টানা সচেতনতা অভিযানের পরে অনেকেই আশা করেছিলেন, বাজির প্রকোপ বোধহয় অনেকটা কম থাকবে। কালীপুজোর রাতে বাজির তেমন কোনও আওয়াজ না পাওয়ায় ওই আশা আরও তীব্র হয়েছিল পরিবেশপ্রেমী থেকে পুলিশ সকলের মধ্যেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩৬
Share:

দূষণ: কোচবিহারে বিসর্জনে বাজির ধোঁয়া। নিজস্ব চিত্র

দীপাবলির রাতে বাজি ফাটাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। তাতেও হুঁশ ফেরেনি কারও। বৃহস্পতিবার দিন থেকে রাত দফায় দফায় বাজি ফাটল কোচবিহারে। একই ছবি দেখা গেল ডুয়ার্সের নানা জায়গায়।

Advertisement

আদালতের রায় ও টানা সচেতনতা অভিযানের পরে অনেকেই আশা করেছিলেন, বাজির প্রকোপ বোধহয় অনেকটা কম থাকবে। কালীপুজোর রাতে বাজির তেমন কোনও আওয়াজ না পাওয়ায় ওই আশা আরও তীব্র হয়েছিল পরিবেশপ্রেমী থেকে পুলিশ সকলের মধ্যেই। দীপাবলির রাত অবশ্য সব আশা ভেঙে দেয়। ওইদিন দেদার শব্দবাজি ফাটতে থাকে চারদিকে। পুলিশ এক গলি থেকে আরেক গলি ঘুরে বেড়ালেও পরিস্থিতি বদলায়নি। ওই রাতেই সুনীতি রোডের ওষুধ ব্যবসায়ী অনির্বাণ ঘোষ (৩৬) বাজি ফাটাতে গিয়ে জখম হন। পরে নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়। শহরের মধ্যে এমন একটি ঘটনার পরে পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে আশা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু তার পরেও শব্দবাজি ফাটানো আটকানো যায়নি। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে দেদার ফেটেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। কোচবিহারের জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখিনি। কিন্তু মানুষ যদি সচেতন না হন তাহলে শুধু পুলিশ দিয়ে বাজি ফাটানো রোখা সম্ভব নয়। আগামীদিনে আরও পরিকল্পিত ভাবে কাজ করতে হবে।’’

শব্দাসুর দাপিয়েছে ডুয়ার্সেও। ধূপগুড়িতে বুধবার ও বৃহস্পতিবার অনেক রাত পর্যন্ত সব রকম বাজিই ফেটেছে বলে অভিযোগ। ধোঁয়ায় চারিদিক ঢেকে যাওয়ায় অনেকেই ঘরের জানলা বন্ধ করে দেন। ধূপগুড়িতে শব্দবাজি পোড়াতে গিয়ে শুক্রবার পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারাও। বাজি ঠেকাতে ধূপগুড়িতে পুলিশ তেমন সক্রিয় ছিল না বলেও অভিযোগ। থানায় ফোন করেও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। ধূপগুড়ির পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, অন্য বারের তুলনায় অনেক কম শব্দবাজি ফেটেছে শহরে।

Advertisement

শব্দের দাপটে বৃহস্পতিবার কাহিল হয়েছে আলিপুরদুয়ারও। প্রতিদিনই যেন আগেরদিনকে টেক্কা দিয়ে শব্দবাজি ফেটেছে৷ অনেকেই ভেবেছিলেন, দু’দিনের পর বৃহস্পতিবার হয়তো আর শব্দবাজি ফাটবে না৷ কিন্তু দিনভর মাঝে মধ্যে কোথাও কোথাও একটা-দুটো শব্দবাজি ফাটার পর সন্ধ্যা হতেই তা বেড়ে যায়৷ গভীর রাত পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই চলতে থাকে শব্দবাজির দাপট৷ তুলনায় কম হলেও শব্দবাজি ফাটার অভিযোগ উঠেছে শালকুমারহাট, কুমারগ্রামের অন্য আরও কিছু জায়গা থেকেও৷ প্রতিটি ক্ষেত্রেই পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা৷

পরিবেশবিদ অমল দত্তের অভিযোগ, ‘‘মঙ্গলবার কালীপুজো হয়ে গিয়েছে৷ অথচ, বৃহস্পতিবারও গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটানোর বিকট শব্দ পেলাম৷ সত্যি এটা একটা অবাক করা কাণ্ড৷ পুলিশ প্রশাসনের উচিত বিষয়টিতে নজর দেওয়া৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন