চাহিদা: ডাচ গোলাপের পসরা। নিজস্ব চিত্র
‘রোজ ডে’ থেকে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’, ‘প্রোপোজ ডে’ কিংবা ‘হাগ ডে’। বছরভর বিশেষ ওইসব দিনে চাহিদা বেড়েছে নানা রঙের ডাচ গোলাপের। কেক, মিস্টি বা উপহারের সঙ্গে একগুচ্ছ ডাচ গোলাপ দেওয়ার চল এখন অত্যন্ত জনপ্রিয়। ফুলের দামও উঠছে চরচরিয়ে। তাই উত্তরবঙ্গের ফুলচাষিদের মধ্যে ডাচ গোলাপ চাযের আগ্রহ বাড়তে উদ্যোগী হয়েছে কৃষি দফতর।
উদ্যান পালন দফতর এবং নার্বাডকে সঙ্গে নিয়ে কর্মশালা করার প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে। তেমনই, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলায় অন্তত ১৫ বিঘা জমিতে ডাচ গোলাপ চাষের সিদ্ধান্ত হয়েছে। দফতর সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ির গজলডোবার মিলনপল্লি, টাকিমারি, খড়িবাড়ি, ফাঁসিদেওয়ার হাফতিয়াগছ এবং বিধাননগরে কিছু জমি বাছাই করা হয়েছে। বর্তমানে কমবেশি আড়াই বিঘা জমিতে গোলাপের চাষ হয়। কিন্তু চাষিরা পলিহাউসের মাধ্যমে গোলাপ চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হোক, চাইছেন কৃষি কর্তারা। আবার গজলডোবা লাগোয়া এলাকায় চাষ সফলভাবে করা গেলে তা পর্যটক আকর্ষণ করতে পারে বলেও মনে করছেন অফিসাররা।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম সহ কৃষি অধিকর্তা মেহফুজ আহমেদ বলেন, ‘‘কাট ফ্লাওয়ার বা ফুল বিক্রি শুধু নয়, ডাচ প্রজাতিতে সহজেই চারা তৈরি করা যায়। বিভিন্ন ফার্মাস ক্লাবের চাষিদের সব শেখানো হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ঋণের ব্যবস্থা থেকে ভর্তুকি এবং চারা সরবরাহের ব্যবস্থা হচ্ছে।
কৃষি দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, কোলাঘাট এবং মেদিনীপুরের দিক থেকে রোজ ট্রেনে ডাচ গোলাপ আসে। প্যাকেটবন্দি ওই গোলাপ শিলিগুড়ি হয়ে বিভিন্ন বাজারে যায়। এক একটি ডাচ গোলাপ ৮/১০ টাকায় বিক্রি হয়। বিশেষ দিনগুলিতে ১২/১৫ টাকা পর্যন্ত উঠে যায় দাম। খরচ ধরলে যা ২/৩ টাকার বেশি নয়। সাদা, হলুদ বা গোলাপির তুলনায় লাল রঙের গোলাপের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। মূল গাছের চারা আসে বেঙ্গালুরু থেকে। দোঁয়াশ মাটি, হালকা রোদে থাকা পলিহাউসে পাঁচ মাসের মধ্যেই গাছে ফুল এসে যায়। ফুল কাটিং করে আলাদা করে কান্ড দিয়ে চারা বাজারে বিক্রি হয়। মোটামুটি ৫০০ বর্গমিটার জমিতে পলিহাউস দিয়ে চাষের জন্য ১ লক্ষ টাকা প্রয়োজন হয়। পলিহাউস করলে চাষিদের ভর্তুকির বন্দোবস্ত করছে কৃষি দফতর।
টাকিমারির সুজিত সরকার, ছোট হাফতিয়াগছের মহম্মদ সফিদূল বা অংশুমান বর্মনরা অল্প জমিতে গোলাপের চাষ করছেন। তাঁরা বলেন, ‘‘দেশি গোলাপের চাষ করেছি। এর তুলনায় ডাচের চাহিদা অনেক বেশি। পলি হাউস করে এ বার তা করব। ফুলের দোকান থেকে উপহার সামগ্রী, এমনকি কেকের দোকানেও আজকাল গোলাপ রাখা হচ্ছে।’’