গাছ: রাস্তার উপরে কাটা হচ্ছে গাছ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
আলোচনা নিস্ফলা। তার পরেই বিশাল পুলিশ বাহিনী নামিয়ে জাতীয় সড়কে কড়া নজরদারির মধ্যে লাটাগুড়িতে গাছ কাটা শুরু করল বন দফতর। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। গাছ কাটা ঠেকাতে পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙলে আট জনকে আটকও করা হয়৷
লাটাগুড়িতে রেল লাইনের ওপর উড়ালপুল তৈরির জন্য গত সোমবার জাতীয় সড়কের দুধারে গাছ কাটতে যান বন উন্নয়ন নিগমের কর্মীরা৷ কিন্তু এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান স্থানীয় বনবস্তির মানুষ।
তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ায় পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি। এর জেরে দশটা গাছ কাটার পরেই থমকে যান সরকারি কর্মীরা। কাজ বন্ধ রেখে তাঁদের এলাকা ছাড়তে হয়।
এর পরে পালা করে গাছ পাহারাও চলে। আলাপ-আলোচনাও হয় সবপক্ষের মধ্যে। কিন্তু কোনও কিছুতেই মীমাংসা সূত্র বেরোয়নি। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়, বৃহস্পতিবার থেকে গাছ কাটা শুরু হবে।
এ দিন আটঘাট নামে প্রশাসন। সকালেই গরুমারা চেকপোস্ট থেকে নেওড়া মোড় পর্যন্ত জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ বিভিন্ন গাড়িকে বড়দিঘি দিয়ে ঘুরিয়ে চালানো হয়৷ জেলার বিভিন্ন থানা থেকে এনে কয়েকশো পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷ যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিমা নর্বু ভুটিয়া, মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী, মালবাজারের বিডিও ভূষণ শেরপাও। পুলিশের ঘেরাটোপে বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ গাছ কাটা শুরু করে বন উন্নয়ন নিগম।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নেওড়া মোড়ের কাছে ভিড় জমাতে থাকেন স্থানীয় বনবস্তির লোকেরা। সঙ্গে পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলিও। তাঁদের দাবি, পরিবেশ দফতর গাছ কাটার ছাড়পত্র দিয়েছে কি না, তা আগে দেখা হোক। তাঁদের অভিযোগ, উড়ালপুলের নাম করে কমপক্ষে আড়াই হাজার গাছ কাটা হবে। এই নিয়ে কথা বলার জন্য তাঁরা ঘটনাস্থলে থাকা আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতে চান।
কিন্তু পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। সেই ব্যারিকেড ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করতেই আট জনকে আটক করে নাগরাকাটা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি অবশ্য বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া জন্য সাত জনকে ধরা হয়েছে। বন উন্নয়ন দফতর বিক্ষোভকারীদের দাবি মানতে চায়নি।
যদিও আন্দোলনরত একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের কর্ণধার অনির্বাণ মজুমদার বলেন, গাছ কাটা নিয়ে পরিবেশ দফতর ছাড়পত্র দিয়ে থাকলে তা আমাদের দেখানো হচ্ছে না কেন? এ ব্যাপারে ডিএফও বিদ্যুৎ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই নিয়ে কথা বলতে চাননি।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠনগুলি অবশ্য এর পরে অনশন এবং আইনের পথে হাঁটার হুমকি দিয়েছে।