এই রাস্তাতেই চলাচল। — নিজস্ব চিত্র
রাস্তা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে পিচের চাদর। কোথাও বড় গর্ত তৈরি হয়েছে রাস্তার উপরেই। আবার কোথাও ধসে গিয়েছে রাস্তার একটি অংশ। বর্ষায় কোচবিহার শহরের গলি থেকে বড় রাস্তা সব জায়গার চিত্র এক। রাস্তার এই বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা দিয়ে চলাচল করা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও ছোটখাটো দুর্ঘটনা হচ্ছে। যে কোনও দিন বড় কোনও দুর্ঘটনা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। পূর্ত দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, বর্ষার সময় কিছু রাস্তা খারাপ হয়েছে, বর্ষার পরেই সেগুলি সংস্কারে হাত দেওয়া হবে। কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিষয়টি নিয়ে পূর্ত দফতরের কোচবিহার জেলার নির্বাহী বাস্তুকার নিমাইচন্দ্র পালের সঙ্গে কথা বলেছেন। মিহিরবাবু জানান, বর্ষার জন্য বেহাল রাস্তার দ্রুত সংস্কারের বিষয়ে পূর্ত দফতরের জেলার নির্বাহী বাস্তকার তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন। জেলা নির্বাহী বাস্তুকার বলেন, “রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে বৃষ্টির জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত কাজ হবে।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষা নামতেই কোচবিহার শহর ও লাগোয়া এলাকার একাধিক রাস্তা খারাপ হয়ে পড়ে। বিবেকানন্দ স্ট্রিট থেকে শুরু করে আশ্রম রোড, এনএন রোড ও বাই লেন, হিতেন্দ্র নারায়ণ রোড, হাউজিং রোড, বিশ্বসিংহ রোড, আইটিআই রোড, ব্যাংচাতড়া রোড-সহ বহু রাস্তার একাধিক জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে। দেবীবাড়ি এলাকার রাস্তারও একই দশা। কোচবিহার শহর থেকে তোর্সা সেতুতে ওঠার আগে দিনহাটা রোডের বেশ কিছুটা অংশ বেহাল হয়ে পড়েছে। রাস্তার পিচ উঠে ছোট ছোট পাথর বেরিয়ে এসেছে। রাতের বেলা ওই রাস্তায় চলাচল করা বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, সেতু তৈরির সময় সেখানে পথবাতির মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তার জন্যে দু’পাশে ২০টির বেশি স্তম্ভ তৈরি করা হলেও আলো জ্বলে না। এমনকী সেতুর উপরেও একটু বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। ঘুঘুমারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গৌতম দত্ত বলেন, “এই রাস্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও নজর দেওয়া হয় না। বহু বছর ধরে আলো জ্বলছে না।’’ এখন রাস্তার যা অবস্থা হয়েছে তাতে জীবন হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হয় বলে জানান তিনি।
কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তারও একটি অংশের বেহাল দশা। সেখানে রাস্তার উপরে তৈরি বড় বড় গর্ততে জল জমে থাকছে। তার মধ্যে দিয়েই ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের যাতায়াত করতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজন বলেন, “এই রাস্তা দ্রুত মেরামত করে দিলে যাতায়াতে সুবিধে হয়।” প্রতি বছর মেরামতের পরেও রাস্তা কেন খারাপ হয়ে যায় সে প্রশ্ন তুলেছেন শহরের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, “সংস্কারের সময় ঠিকঠাক কাজ হয় না। কোনও রকমে কাজ সাড়া হয় বলেই বর্ষায় ভোগান্তি হয়।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা রাস্তার দ্রুত সংস্কারের দাবি তুলেছেন।