ইসলামপুরে গুলিতে মৃত এক ছাত্র। —ফাইল ছবি
দাড়িভিট হাইস্কুল খোলার লক্ষ্যে দুই নিহতের পরিবারকে বৈঠক ডেকেছিল প্রশাসন। সোমবার সকাল ১১টায় ইসলামপুরের মহকুমাশাসকের অফিসে এই বৈঠকের কথা থাকলেও নিহতদের পরিবারের কেউ আসেননি। ফলে স্কুল খোলার উদ্যোগ ফের ভেস্তে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
বৈঠকে দাড়িভিট-কাণ্ডে নিহত রাজেশ সরকারের বাবা নীলকমল সরকার এবং তাপস বর্মণের বাবা বাদল বর্মণকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছিল। প্রশাসনের দাবি, নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেই বৈঠক স্থির করা হয়েছিল। কিন্ত দিনভর কেটে গেলেও তাঁরা না আসায় কার্যত স্কুল খোলার উদ্যোগ ফের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেল বলে মনে করছেন প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ। নিহত তাপস এবং রাজেশের বাবারা বলেন, ‘‘আমাদের কোনও বৈঠকে ডাকা হয়নি। তা ছাড়া তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত বৈঠকে যাবই বা কেন!’’ যদিও ইসলামপুরের মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র এ দিন বলেন, ‘‘আমরা স্কুল খোলার লক্ষ্যে অভিভাবকদের বৈঠকে ডেকেছিলাম। কিন্তু জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের লোকজন আসার কারণে ওঁরা বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। পরে আবার বৈঠকে ওঁদের ডাকা হবে। যত শীঘ্র স্কুল খোলা যায় ততই ভাল।’’
এ দিনের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে স্কুলের পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা। স্কুলে ১৯০০ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে সকলেই। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু ঘটনার পরদিন থেকে বেপাত্তা। সহকারী প্রধান শিক্ষককে ডাকা হলেও তিনি আসছেন না।
উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি সম্পাদক সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘প্রশাসন মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারছেন না? এটা প্রশাসনিক গাফিলাতি।’’ এ দিন সিপিএম দাড়িভিট নিয়ে ইসলামপুরে সভা ও শান্তি মিছিল করে। সভায় উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মন্ত্রী আনোয়ারুল হক এবং সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায়। তাঁরা স্কুলে সুস্থ ভাবে পঠনপাঠন চালু করার দাবিও জানান। অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দাড়িভিটে অচলাবস্থা কাঠানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি প্রশাসন। গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে কাটাচ্ছেন। স্কুল সুস্থ ভাবে পঠনপাঠন চালু করার বিষয়ে উদ্যোগী হচ্ছে না। তাঁরা দাবি করেন, সিআইডি বা সিবিআই নয়, ঘটনার একমাত্র নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে বিচারবিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে। ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক কানাইয়লাল অগ্রবাল অবশ্য বলেন, ‘‘স্কুল খোলার বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক দেখছেন।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিত মাইতিকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন তোলেননি।