তপসিখাতায় গুলিতে খুন

বিচার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার তপসিখাতায় খুন হন তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ। অভিযোগ ওঠে, জয় বাংলা হাটে স্থানীয় পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান শম্ভু রায় ও তার দলবল প্রথমে তুষারকে মারধর করে৷ তারপর শম্ভু কোমর থেকে রিভলভার বের করে তুষারকে খুন করে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা ইতিমধ্যেই বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন। দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যাপারে সাধ্যমত চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। কিন্তু ঘটনার দশদিনের মাথাতেও মূল অভিযুক্ত উপপ্রধান গ্রেফতার না হওয়ায় আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের উপর আর ভরসা করতে পারছেন না বলে জানাচ্ছেন তপসিখাতার নিহত তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণের পরিজনেরা। এ বার তাই গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার তুষারের জ্যাঠামশাই অরুণচন্দ্র বর্মণ অভিযোগ করেন, “আমার ভাইপো দশদিন আগে খুন হয়েছে। তারপর থেকে সবাই আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু মূল অভিযুক্তকেই এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ঘটনার ভার যাতে সিআইডি-কে দেওয়া হয় সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি জানাব।”

Advertisement

গত সপ্তাহের মঙ্গলবার তপসিখাতায় খুন হন তৃণমূল কর্মী তুষার বর্মণ। অভিযোগ ওঠে, জয় বাংলা হাটে স্থানীয় পরোরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান শম্ভু রায় ও তার দলবল প্রথমে তুষারকে মারধর করে৷ তারপর শম্ভু কোমর থেকে রিভলভার বের করে তুষারকে খুন করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় পুলিশ সোনা রায় নামেক তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করলেও শম্ভু-সহ তিন অভিযুক্ত এখনও পলাতক।

তুষার খুনের পরই তপসিখাতায় প্রবল জনরোষ তৈরি হয়। যার বেশিরভাগটাই ছিল শম্ভুদের বিরুদ্ধে৷ সেইসঙ্গে বারবার অভিযোগ পেয়েও কেন দলের শীর্ষ নেতারা কিংবা পুলিশ আগে থেকেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সেই প্রশ্নও তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি শম্ভুদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে নামেন স্থানীয়রা। ঘটনার ন’দিনের মাথায় বুধবার তুষারের বাড়িতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বকেও।

Advertisement

শম্ভুরা গ্রেফতার না হওয়ায় বৃহস্পতিবারও ক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে তপসিখাতায়৷ সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ তুষারের পরিবারের লোকেরা। তুষারের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, “প্রথমে বলা হল শম্ভুরা আশেপাশেই কোথাও লুকিয়ে রয়েছে। এখন আবার বলা হচ্ছে ওরা ভিন্‌ রাজ্যে পালিয়ে গিয়েছে। আমাদের স্থির বিশ্বাস, জেলার কোথাও ওরা লুকিয়ে রয়েছে। মাথায় বড় বড় নেতাদের হাত থাকাতেই পুলিশ ওদের গ্রেফতার করছে না।” তুষারের জ্যাঠামশাই অরুণবাবু বলেন, ‘‘সেজন্যই তো আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’

যদিও বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এরও উত্তর দেননি। তবে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার- ১ব্লক সভাপতি মনোরঞ্জন দে বলেন, “বাকি অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ সমস্ত রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।” আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “দলের উপরে তুষারের বাড়ির লোকেদের ভরসা রয়েছে। আমরাও প্রথম থেকেই দোষীদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন