সূর্যোদয় থেকেই মায়ের কোলে ফেরা মসিউরের

মায়ের কোলে ফিরে তিন বছরের কষ্ট, আনন্দ চোখের জলে ভাষা পেল। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললেন মা-বাবাও। বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়ে রায়গঞ্জের সরকারি হোম ‘সূর্যোদয়’-এ ঠাঁই হয়েছিল বছর দশেকের মূক ও বধির কিশোর মসিউর রহমানের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১৫
Share:

মা-বাবা, ভাই-বোনেদের সঙ্গে মসিউর। — নিজস্ব চিত্র

মায়ের কোলে ফিরে তিন বছরের কষ্ট, আনন্দ চোখের জলে ভাষা পেল। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে কেঁদে ফেললেন মা-বাবাও।

Advertisement

বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়ে রায়গঞ্জের সরকারি হোম ‘সূর্যোদয়’-এ ঠাঁই হয়েছিল বছর দশেকের মূক ও বধির কিশোর মসিউর রহমানের। মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের বাসিন্দা মসিউরকে শনিবার দুপুরে পরিবারের হাতে তুলে দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা সমাজকল্যাণ দফতর ও শিশুকল্যান সমিতির সদস্যরা।

মসিউরের বাবা মজিবুর রহমান ও মা আসিয়া খাতুন বলেন, ‘‘বহু খোঁজাখুজির পর আমরা ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। এ দিন ওকে পেয়ে আর চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি।’’

Advertisement

মজিবুরের গাড়ির ব্যবসা রয়েছে। বাড়ির কাছেই তাঁর অফিস। তিন ছেলে চার মেয়েকে নিয়ে আসিয়ার সংসার। মেজো ছেলে মসিউর জন্ম থেকেই মূক ও বধির ছিল। সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধেয় মালদহের স্টেশন রোড এলাকায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। বাসিন্দারা তার কাছে নাম ও ঠিকানা জানার চেষ্টা করলেও মূক ও বধির হওয়ায় সে কিছুই বলতে পারেনি।

এর পরই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে মালদহ জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেয়। তারা এর পর তাকে মালদহেরই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হোমে রাখে। মসিউরের পড়াশোনা ও মানসিক বিকাশের জন্য ২৪ জুলাই সেখান থেকে তাকে রায়গঞ্জের সূর্যোদয় মূক ও বধির হোমে পাঠানো হয়। সেই থেকেই সে সূর্যোদয়ে।

মজিবুরের দাবি, ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে তাঁর অফিসে যাওয়ার পথে মসিউর নিখোঁজ হয়ে যায়। পর দিন সামসেরগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘গত দু’বছর ন’মাসে পুলিশ ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেনি। দু’সপ্তাহ আগে আগে ছেলের খোঁজে মালদহের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হোমে গিয়েছিলাম। সেখান থেকেই জানতে পারি, রায়গঞ্জে একটি মূক ও বধির হোম রয়েছে। শেষে এই হোমে এসে ছেলের খোঁজ পাই।’’

জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিক পিনাকী গুপ্ত ও জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অসীম রায়ের দাবি, ‘‘উপযুক্ত প্রমাণ ও টিআই প্যারেডের মাধ্যমে মসিউর পরিবারের লোকেদের শনাক্ত করেছে। এর পরেই তাকে পরিবারের লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন