বৃদ্ধার মৃত্যু, হাতের ছাপ নিয়ে রহস্য

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে দেহটি প্রথমে দেখতে পান পরিবারের সদস্যরাই। তারালতাদেবীর বড় ছেলে তাপস এবং পুত্রবধূ সোমার দাবি, মানসিক অবসাদ ছিল তাঁর, অসুস্থও ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৬
Share:

তদন্ত ১: জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ আধিকারিক। নিজস্ব চিত্র।

বহুতলের চাতাল থেকে উদ্ধার হল অশীতিপর এক বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ। আর তার সঙ্গেই চারতলা বাড়ির সিঁড়ির দেওয়ালে মিলল অনেকগুলি রক্তমাখা হাতের ছাপ। হাকিমপাড়ায় বৃহস্পতিবার তারালতা রায়ের (৮৪) মৃত্যুতে তাই তৈরি হল রহস্য। পরিবারের সদস্য বৃদ্ধার মানসিক অবসাদের কথা বলতেও তাই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অবসাদে আত্মহত্যার কথা মানতে চাননি পরিবারের কেউ কেউও।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে দেহটি প্রথমে দেখতে পান পরিবারের সদস্যরাই। তারালতাদেবীর বড় ছেলে তাপস এবং পুত্রবধূ সোমার দাবি, মানসিক অবসাদ ছিল তাঁর, অসুস্থও ছিলেন। কোনওভাবে ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। যদিও পুলিশ জানায়, বুধবার রাতেই ওই পরিবারে অশান্তি হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে তারা। চারতলা বাড়ির সিঁড়িতে অনেকগুলি জায়গায় রক্তমাখা হাতের ছাপও মিলেছে। তাতেই বৃদ্ধার রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, দেহের ময়নাতদন্তের পরই কিছু বলা সম্ভব। ঘটনাস্থল থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্টও সংগ্রহ করেছে পুলিশ। মানসিক অবসাদে আত্মহত্যার তত্ত্ব মানছেন না বৃদ্ধার ছোট মেয়ে কাকলি রায়। পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের হতে পারে।

পুলিশ জানায়, তারালতাদেবীর ছোট ছেলে অমিতাভ রায় হুগলির উত্তরপাড়ায় থাকেন। সেখান থেকে কয়েক মাস হল তিনি শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় বড় ছেলের বাড়ি এসেছিলেন। চারতলায় একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তাঁরা। ওই বহুতলের এক প্রতিবেশী জানান, তারালতাদেবী মাঝে মধ্যে ছাদে যেতেন, অন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে হাসিমুখেই কথা বলতেন।

Advertisement

তদন্ত ২: হাতের ছাপের ছবি তুলছেন পুলিশ আধিকারিক। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

মৃতার পুত্রবধূ সোমার দাবি, এ দিন সকাল থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ওই বৃদ্ধাকে। পাড়ায় তাঁকে খুঁজতেও বের হন তাঁরা। কিন্তু পরে চারতলা বাড়ির পিছনে দেহটি দেখতে পান তাঁরা। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে গেলে সোমা দাবি করেন, বৃদ্ধার বড় মেয়ে সোমবার তাঁকে ফোন করে অভিযোগ করেন, তাঁর মাকে অত্যাচার করা হচ্ছে। ছোট মেয়ে কাকলি রায় এ দিন বলেন, ‘‘মাকে অত্যাচার করেই মেরে ফেলা হয়েছে। মায়ের কোমর ভাঙা ছিল। কোনও রকমে হাঁটতেন। আমরা শিলিগুড়িতে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করব।’’ যদিও মৃতার বড় ছেলে এবং পুত্রবধু সোমাদেবীর দাবি, এই অভিযোগ ঠিক নয়।

প্রশ্ন উঠেছে, কোমর যদি সত্যি ভাঙা থাকে, তা হলে তিনি ছাদের তিন ফুট রেলিং টপকে ঝাঁপ দিতে পারেন কি? শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। কলকাতা থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের যাতে আনা যায়, তার চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন