—প্রতীকী ছবি।
কখনও তোয়ালের আড়ালে চলে আসছে মদ। আবার কখনও কোমরে বোতল গুঁজে রেখে গ্রাহকের খোঁজে চলছে। টাকা ফেললেই পছন্দসই ‘ব্র্যান্ড’ চলে আসছে হাতে। রাজধানী এক্সপ্রেস থেকে শুরু করে সরাইঘাট প্রত্যেক ট্রেনেই এমন ভাবেই মদের কারবার চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমি মাঝে মাঝে ওই ট্রেনে যাতায়াত করি। এ ছাড়া কোচবিহার থেকে অনেকেই দিল্লিতে যাতায়াত করেন। এমন অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। নির্দিষ্ট জায়গায় জানাব।”
প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিতে নিরাপত্তার ফাঁকে নেশার অভিযোগ হরদম ওঠে। মদ তো বটেই সিগারেট, গাঁজার রমরমার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু দূরের ওই বিশেষ ট্রেনগুলিতে নেশার জিনিসের এমন রমরমায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাঁরা দাবি তুলেছেন, এই বিষয়ে রেল দফতরকে আরও কড়া অবস্থান নেওয়া উচিত। নিরাপত্তা আঁটোসাটো শুধু নয়, কারা এই বেআইনি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তাঁদের চিহ্নিত করা উচিত। উত্তর-পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, “নেশা করার কোনও তথ্য পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ ছাড়া নিয়মিত তল্লাশিতেও অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
গুয়াহাটি থেকে একাধিক ট্রেন নিউ কোচবিহার হয়ে কলকাতা, দিল্লি, বেঙ্গালুরু সহ একাধিক জায়গায় যায়। ওই ট্রেনগুলির মধ্যে রাজধানী এক্সপ্রেস অন্যতম। দিল্লিগামী ওই বিশেষ ট্রেনেই মদের বেআইনি কারবারের অভিযোগ উঠেছে। দিন কয়েক আগেই ওই ট্রেনেই দিল্লি থেকে কোচবিহার ফেরেন কয়েকজন যাত্রী। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের চোখের সামনেই মদের বোতল বিক্রি হয়। সেক্ষেত্রে দাম দ্বিগুণ, প্রয়োজনে তিনগুণ হয়।
এক যাত্রীর কথায়, “তোয়ালের আড়ালে মদ নিয়ে এসে হাতবদল করা হয়। সঙ্গে সঙ্গেই টাকাও নিতে দেখেছি।” তাঁদের অভিযোগ, নেশাদ্রব্যের এমন রমরমায় যে কোনও সময় নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। নিউ কোচবিহার থেকে কলকাতাগামী ট্রেন উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস। এ ছাড়া তিস্তা তোর্সা, পদাতিক এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন আলিপুরদুয়ার থেকে ছেড়ে নিউ কোচবিহার হয়েই কলকাতায় যায়। এ ছাড়া সরাইঘাট এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনও নিউ কোচবিহার হয়েই হাওড়া যায়। ওই ট্রেনগুলিতেও এমন অভিযোগ রয়েছে। রাতের দিকে শৌচাগারের ভিতর বা সামনে দাঁড়িয়েই অনেকে নেশা করেন বলে অভিযোগ। রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, রাজধানীর মতো এই ট্রেনগুলিতেও কড়া নজরদারি রয়েছে। রেল পুলিশ রাতভর ঘোরাঘুরি করেন। তাঁদের চোখে এমনটা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।