প্রণামীতে ভাটা, নোট বাতিলের প্রভাব রাসেও

নোটের বাতিলের গেরো ছাড়ল না কোচবিহারের রাজাদের কুলদেবতাকেও। মেলার মরসুমে ভরছে না মদনমোহন মন্দির চত্বরের বেশিরভাগ প্রণামীর বাক্স। দেবোত্তর কর্তাদের একাংশের ধারণা, নোট বাতিলের পরে খুচরো টাকার সমস্যার জন্যই টান পড়ছে প্রণামীতে। রাস উৎসবের ভরা মরসুম চলছে।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৫৭
Share:

রাসেও ভরল না মদনমোহন মন্দিরের প্রণামী বাক্স। — নিজস্ব চিত্র

নোটের বাতিলের গেরো ছাড়ল না কোচবিহারের রাজাদের কুলদেবতাকেও। মেলার মরসুমে ভরছে না মদনমোহন মন্দির চত্বরের বেশিরভাগ প্রণামীর বাক্স। দেবোত্তর কর্তাদের একাংশের ধারণা, নোট বাতিলের পরে খুচরো টাকার সমস্যার জন্যই টান পড়ছে প্রণামীতে।

Advertisement

রাস উৎসবের ভরা মরসুম চলছে। রাসমেলা শুরুর পরে কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। সোমবার রাস উৎসবের প্রথম দফায় প্রণামীর বাক্স খোলার পর প্রণামী কম পড়ার ছবি স্পষ্ট হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কর্তারা। বোর্ডের সদস্য প্রসেনজিৎ বর্মন সাফ বলেছেন, “নোট সমস্যার প্রভাব প্রণামীর বাক্সে তো পড়ছেই। আগেরবারের তুলনায় প্রণামীর টাকা কম পড়ছে।” যদিও দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য তথা কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক অরুন্ধুতী দে এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এ বার ১৪ নভেম্বর কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের সূচনা হয়। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্য পিছিয়ে যাওয়া রাসমেলার উদ্বোধন হয় ২৩ নভেম্বর। এতদিনেও মন্দির চত্বরে রাখা বাক্সে প্রণামী দিতে তেমন ভিড় নেই। অথচ গতবার ভক্তদের প্রণামী দেওয়ার বহর দেখে এবার প্রণামীর বাক্স একটি বাড়ানো হয়েছে। সোমবার কড়া পাহারায় ওই দশটি প্রণামীর বাক্সের মধ্যে ন’টি খোলা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, মাত্র দু’টি বাক্সে প্রণামী ভরেছে। তাও একশো, পঞ্চাশের নোট তেমন নেই। বেশিরভাগই দশ ও কুড়ি টাকার নোট। আর বাকিটা খুচরো টাকা। বাকি ছ’টি বাক্সের অর্ধেক পুরো খালি ছিল। এমনকী একটি বাক্স প্রায় খালি ছিল বলে জানান ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্যরা।

Advertisement

মদনমোহন মন্দিরে মোট ১০টি প্রণামীর বাক্স রয়েছে। দু’টি মদনমোহন বিগ্রহের বারান্দার সামনে। অন্যগুলি মা ভবানী, তারা, কালী মন্দিরের সামনে। একটি করে বাক্স রাখা হয়েছে হনুমান বিগ্রহ ও পুতনা রাক্ষসীর মূর্তির সামনে। ফি বছর রাস উৎসব শুরুর পর টানা দু’সপ্তাহে অন্তত তিনবার সব বাক্স খোলা হয়। সংখ্যার দিক থেকে একশো, পাঁচশো বা এক হাজার নোটের প্রণামী পাল্লা দিত খুচরো টাকার সঙ্গে। দেবোত্তরের এক কর্মী জানিয়েছেন, মদনমোহন বিগ্রহের সামনে রাখা দু’টি বাক্সই প্রথম দফায় ভর্তি ছিল। তাতে দশ টাকার নোটই বেশি। গতবার একসঙ্গে হয়েছিল রাস উৎসব ও মেলা। ওই মরসুমে ন’টি বাক্সে চার লক্ষ পাঁচ হাজার টাকার প্রণামী পড়েছিল।

দেবোত্তর সূত্রের খবর, দশটি প্রণামীর বাক্সের মধ্যে কাচের বাক্স রয়েছে, কাঠের ঢাকনা দেওয়া বাক্সও রয়েছে। কড়া নজরদারিতে সিসিটিভির সামনে সেগুলি খোলার পর ফের ‘সিল’ করে রাখা হয়। যদিও এখনই আশা ছাড়তে নারাজ কর্মীরা। দেবোত্তরের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “মেলা শেষ হতে তো এখনও কিছুদিন বাকি, দেখা যাক।” ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে ওই মেলা। বাকি দিনগুলিতে খরা কাটিয়ে প্রণামীর বাক্স কতটা উপচে পড়ে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন