ঘেরাটোপে: শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে। নিজস্ব চিত্র।
খোদ সুপার বলছেন ওয়ার্ডে একটিও ডেঙ্গি রোগী নেই। অথচ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশই মনে করছেন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যাঁরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁদের ৪০ শতাংশই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। সেই মতোই তাঁরা রোগীদের চিকিৎসা করছেন।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে হাসপাতালে অন্তত ৭০ জন জ্বরের রোগী ভর্তি। তার মধ্যে অন্তত ২৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ধরে নিয়েই চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার রিপোর্ট ছাড়া তাঁদের কারও ডেঙ্গি হয়েছে বলতে নারাজ। অথচ এই রোগীদের বেশিরভাগেরই ম্যাক এলাইজা পরীক্ষা এখনও হয়নি। শহরের নার্সিংহোমগুলিতেও অনেক ডেঙ্গি রোগী ভর্তি রয়েছেন বলে চিকিৎসকদের সূত্রেই জানা গিয়েছে। তাঁদের হিসেব মতো বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলোতে সব মিলিয়ে ৫০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগেও এ দিন জ্বরে নিয়ে অনেক রোগী চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসকের কথায়, আক্রান্তদের উপসর্গ দেখে ডেঙ্গি বলেই মনে হচ্ছে। সেই মতোই চিকিৎসা চলছে। ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি করায় সমস্যা হচ্ছে।
কিন্তু সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালে এখন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বলে কেউ ভর্তি নেই। জ্বর নিয়ে কিছু রোগী ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসকেরা মনে করলে তাদের ডেঙ্গি নির্ণয়ক রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাসও জানান, ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার রিপোর্টে নিশ্চিত না-হলে ডেঙ্গি হয়েছে, বলা যাবে না। তবে জ্বর নিয়ে অনেকেই ভর্তি হচ্ছেন। ডেঙ্গির বিশেষ কোনও চিকিৎসা নেই। চিকিৎসকেরা তাঁদের মতো করে রোগীদের দেখছেন।
শিলিগুড়ির কলেজপাড়ার একটি নার্সিংহোমে, হরেন মুখোপাধ্যায় রোড, খালপাড়া, সেবক রোডে বিভিন্ন নার্সিংহোমে ডেঙ্গি আক্রান্ত অনেক রোগীই ভর্তি রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভাকে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তাতে শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত ৪০ জনের মতো। তার মধ্যে গত ১০ দিনে আক্রান্ত হয়েছে ১৬ জন। বেসরকারি হিসাবে জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যাটা দেড়শোরও বেশি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে সপ্তাহে অন্তত ৫টি ক্ষেত্রে ডেঙ্গির জীবাণু মিলছে বলে হাসপাতালেরই একটি সূত্র জানিয়েছে। জ্বর নিয়ে বহির্বির্ভাগেও প্রচুর রোগী চিকিৎসা করাতে আসছেন।