শিলিগুড়িতে পুজোর মুখেই ডেঙ্গি আতঙ্ক

পুজো এলেও ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না শিলিগুড়িতে। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারাই স্বীকার করেছেন তা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০। গোটা দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা এ দিন পর্যন্ত ১০১।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০২:২৪
Share:

পুজো এলেও ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না শিলিগুড়িতে। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারাই স্বীকার করেছেন তা। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০। গোটা দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা এ দিন পর্যন্ত ১০১। শিলিগুড়ি শহরেরই যে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি তা স্পষ্ট।

Advertisement

শহরের ১, ৪, ৫, ৬, ৮, ৯, ২৩, ৩১, ৪০, ৪৫, এবং ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। জ্বর নিয়ে এখনও অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল এবং শহরের কয়েকটি নার্সিংহোমে। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য পুজোর সময় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের টানা ছুটি বাতিল করেছেন। পুজোর দিনগুলিতেও তাঁরা ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা প্রচারের জন্য লিফলেট বিলির মতো বিভিন্ন কাজ করবেন।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গি চলবে। তাই প্রতিরোধের কাজ হালকা ভাবে দেখার ব্যাপার নেই। পুজোর সময়ও প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। লিফলেট বিলি, বাড়ির কোথাও যেন জল জমে না-থাকে সে ব্যাপারে বাসিন্দাদের সচেতন করা হবে। আমাদের পক্ষ থেকেও রোগ প্রতিরোধে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণ, আক্রান্তদের মধ্যে একটা অংশ বাইরে থেকে জ্বর নিয়ে শহরে ফিরেছেন। তাঁদের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। কোন এলাকা থেকে তাঁরা এসেছেন সেই তথ্যও সংশ্লিষ্ট এলাকার স্বাস্থ্য কর্তাদের জানানো হচ্ছে। যাতে ওই সমস্ত এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন দিনে অন্তত ৪ জন নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এ দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় সাফাই কর্মসূচি পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সচেতনতা প্রচারে পুজোর দিনগুলিকে কাজে লাগানো হবে। প্রতিটি মণ্ডপে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য কর্মীরাও এ সময় কাজ করবেন।’’

স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ জানান, ডেঙ্গির বাহক এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার জলে জন্মায়। বাড়িতে কোনও পাত্রে জমে থাকা জল, রেফ্রিজারেটর, এসি যন্ত্রে জমে থাকা জল, নারকেল, ডাবের খোলায় জমা জলে এবং পুরনো টায়ারে জমে থাকা জলে এ ধরনের মশার লার্ভা হয়। সে সব জায়গায় যাতে জল জমে না থাকে তা বাসিন্দাদের নজরে রাখতে হবে। পুর কর্মীরা যারা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করতে যান তাঁরা বাড়িতে ঢুকে বিষয়টি দেখবেন। পুরনো টবে বা কোথাও জল জমে থাকলে তা ফেলে পাত্রটি উল্টে দেবেন। বিভিন্ন এলাকায় যে সমস্ত নির্মাণ কাজ চলছে সে সব জায়গায় জমা জল ডেঙ্গির পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে বলে মনে করছে পুরসভার বিরোধী দল তৃণমূল। বিরোধী কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে কয়েকটি বৈঠক ছাড়া তেমন কিছু করা হচ্ছে না পুরসভার তরফে। ওয়ার্ডগুলিতে মশা মারার তেল, ব্লিচিং, চুন পর্যাপ্ত মিলছে না। শহরের বিভিন্ন এলাকায় আবর্জনা জমে রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন