প্রতীকী ছবি।
এখনও শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গির পরিবেশ, পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে ওই ওয়ার্ডগুলোতে ডেঙ্গির বাহক মশার লার্ভা এখনও মিলছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূ্ত্রই জানিয়েছে।
এর মধ্যে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের পাড়া তথা বিরোধী দলনেতার ওয়ার্ড ২০ নম্বর যেমন রয়েছে। তেমনই ইউপিই সেলের মেয়র পারিষদের চার নম্বর ওয়ার্ডও রয়েছে। ৫ এবং ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডেও পরিস্থিতি এখনও বিপজ্জনক বলে মনে করছেন অনেকেই। পুরসভাকে ওই ওয়ার্ডগুলোতে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে জোর দিতে বারবার করে জানাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘প্রয়োজন মতো কোথায় কী ব্যবস্থা নিতে হবে পুরসভাকে সেই মতো জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানিয়েছেন, তারা প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থাই নিচ্ছেন।
এই পরিস্থিতির মধ্যে এ দিন শিলিগুড়ি হাসপাতালে শিশুদের বহির্বিভাগে জ্বর নিয়ে অনেকেই চিকিৎসা করাতে যান। তবে বেলা ৯ টা থেকে ঘণ্টাখানেক রোগী দেখার পর চিকিৎসকরা চলে যান। অনেকক্ষণ কোনও চিকিৎসকই নেই দেখে শিশুদের অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। খবর পেয়ে বেলা সওয়া বারোটা নাগাদ এসএনসিইউ থেকে এক চিকিৎসককে পাঠানো হয়। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘এ দিন পেডিয়েট্রিক বিভাগের চিকিৎসকদের কোথাও সেমিনার ছিল। চিকিৎসকরা সেখানে যেতে চেয়েছিলেন। তবে বহির্বিভাগের পরিষেবা না দেখে যাওয়া যাবে না বলেছিলাম। যাঁর দায়িত্ব ছিল তিনি কোথায় গিয়েছিলেন কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।’’ জ্বর পরিস্থিতির মধ্যে এভাবে পরিষেবা বন্ধ রেখে চিকিৎসক কেন যাবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অন্যদিকে এখনও শহরে ৪, ৫, ২০, ১৮, ৪৪ নম্বরের মতো ওয়ার্ডগুলিতে পরিস্থিতি সুবিধার নয় বলেই মনে করছেন জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, পতঙ্গবিদরা ওই সমস্ত এলাকা থেকে এখনও ডেঙ্গির বাহক মশার লার্ভা পাচ্ছেন। বিশেষ করে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পরিস্থিতি ভয়াবহ। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডের আদর্শনগর এলাকার অন্তত ৩ জন জ্বর ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে মারা গিয়েছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মহারাজা কলোনি এলাকায় আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে জ্বরে আক্রান্ত হয়েই।
দিন কয়েক আগে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পরিমল মিত্র এবং তাঁর স্ত্রী, পুত্রবধূ সকলেই ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন। তাদের রক্তে এনএসওয়ান পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। পরিস্থিতি নিয়ে পরিমলবাবু নিজেই উদ্বিগ্ন। ৪ এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রচুর রোগী এখনও জ্বর নিয়ে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কারণেই শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ বাড়ি বাড়ি জ্বরের সমীক্ষা চালু রেখেছে। গত পাঁচদিন ধরে সেই সমীক্ষা করা হয়। তাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় এনও জ্বরের রোগী মিলছে। তবে আগের চেয়ে সংখ্যায় অনেকটা কম বলেই পুর কর্তৃপক্ষের দাবি। পুরসভার একাংশ মনে করছেন এথনই ডেঙ্গি নিয়ে আত্মতুষ্ট না হওয়াই ভাল। কেন না শহরের হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলোতে ভাইরাল জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে রোগী ভিড় চলছেই।