শিলিগুড়ি হাসপাতালে জ্বরের রোগী। নিজস্ব চিত্র
সোমবার জ্বর ও ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রাকেশ মাহাতোকে। নার্স স্যালাইন লাগিয়ে বোতলটি ধরিয়ে দিলেন মা ললিতাদেবীর হাতে। কোন শয্যায় রোগীকে রাখবেন জিজ্ঞাসা করতেই নার্স উত্তর দিলেন, ‘‘নিজেরা খুঁজে নিন।’’ যেখানে ফাঁকা পাবেন বসে পড়ুন। অথচ ওয়ার্ডে শয্যা খালি নেই। একই শয্যায় দুই তিন জন। মেঝেতেও জায়গা নেই। তার উপর নোংরা জমে। শেষে ওয়ার্ডের বাইরে করিডরে নিজেরাই চাদর পেতে শোয়ার ব্যবস্থা করলেন। পাশেই জমে রয়েছে আবর্জনা।
দিনের পর দিন হাসপাতালের ওয়ার্ড সাফাই না হওয়ায় নরক হয়ে রয়েছে পরিবেশ। সেই আবর্জনার পাশেই স্যালাইন লাগিয়ে মেঝেতে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোগীদের। জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে এই পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রোগী ও পরিবারের লোকজন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার জয়ন্ত হাঁসদা বলেন, ‘‘শয্যা নিয়ে সমস্যার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
সোমবার দুপুর পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত অন্তত ৫০ জন রোগীকে পুরুষ মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। সাফাই যে ঠিক মতো হচ্ছে না তা স্বীকার করে নিয়েছেন জয়ন্তবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘মেঝেতে রোগী থাকায় সাফাই করতে সমস্যা হচ্ছে। অন্য দিকে পুজোর সময় সাফাই কর্মীদের অনেকেই ছুটিতে। সোমবার থেকে ওই কর্মীরা কাজে যোগ দিচ্ছেন। ওয়ার্ড সাফ না-হওয়ায় নোংরা, দুর্গন্ধের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে বলে ক্ষুব্ধ নার্সরাও। বারবার বলার পরেও সাফাই কর্মী আসছে না-বলে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
হাসপাতালের পুরুষ, মহিলা মেডিসিন বিভাগ, আইডি ওয়ার্ডে কোথাও শয্যা খালি নেই। মহিলা মেডিসিন বিভাগে ৩৬ শয্যার ওয়ার্ডে রোগী রয়েছেন ১১৫ জন। পুরুষ মেডিসিন বিভাগে দেড়শোর ওপরে রোগী। সিংহ ভাগই জ্বর, ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি। পুরুষ এবং মহিলা আইডি বিভাগেও ভিড় জ্বরের রোগীদের।