Tea Garden

প্রশ্ন রেখেই ‘খুলল’ ঢেকলাপাড়া চা বাগান

শিলিগুড়ির যে কোম্পানি বাগানের দায়িত্ব নিয়েছে, তার ডিরেক্টর নিখিল কল্যাণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

আলিপুরদুয়ার, মাদারিহাট শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩৬
Share:

ফিতে কাটা হচ্ছে ঢেকলাপাড়া চা বাগান। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘ প্রায় একুশ বছর বন্ধ থাকার পরে, বুধবার ‘খুলল’ বীরপাড়ার ঢেকলাপাড়া চা বাগান। তবে এ দিন প্রশাসন বা শ্রম দফতরের আধিকারিকদের বাগানে দেখা না মেলায় উঠেছে প্রশ্ন। তবে তৃণমূল ও বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অবশ্য সেখানে ছিলেন। ছিলেন মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গাও। বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের দাবি, এ দিন বাগান খোলার কথা বলা হলেও, সরকরি ভাবে যে সেটা হল, তা বলা যাবে না। কারণ, প্রশাসনকে ছাড়াই শ্রমিক ও মালিক পক্ষের মধ্যে এই বাগান খোলার চুক্তি হয়েছে। এমনকি, বাগান খোলার দিনও প্রশাসনের কেউ ছিলেন না।

Advertisement

শ্রম দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে ঢেকলাপাড়া চা বাগান বন্ধ হয়ে যায়। তার চার বছর পরে, কলকাতা হাই কোর্ট বাগানটির ই-নিলামের জন্য সরকারি ‘লিকুইডেটর’ (যারা সংস্থার ঋণ পরিশোধ করার জন্য সংস্থাটির সম্পত্তি বিক্রির ব্যবস্থা করে) নিয়োগ করে। তার পরেও কেউই বাগানটি নিতে এগিয়ে আসেনি। এরই মধ্যে সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারের ‘ডুয়ার্সকন্যা’য় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে শিলিগুড়ির একটি চা বাগান কোম্পানির সঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপির দুই চা শ্রমিক সংগঠন, তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন ও ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের চুক্তি হয়। সে চুক্তি অনুযায়ী, এ দিন বাগান খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালিক পক্ষ ও শ্রমিকেরা।

শিলিগুড়ির যে কোম্পানি বাগানের দায়িত্ব নিয়েছে, তার ডিরেক্টর নিখিল কল্যাণীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বাগানের নতুন ‘মালিক পক্ষ’-র তরফে জানানো হয়েছে, শ্রমিকেরা ঢেকলাপাড়া চা বাগান খোলার ব্যাপারে আর্জি জানিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী এ দিন ওই বাগান খোলা হয়েছে। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, “২০০২ সালে বাগান বন্ধ হয়। তার পরে, হাইকোর্টলিকুইডেটর নিয়োগ করে। কিন্তু ৪৩ বার দরপত্র ডাকা সত্ত্বেও কেউ বাগানের দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসেনি। নতুন মালিক পক্ষের হাত ধরে এ দিন বাগান খুলেছে।’’ সম্প্রতি নতুন মালিক পক্ষের সঙ্গে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, মালিক পক্ষই হাইকোর্টে গিয়ে লিকুইডেটরের বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে।” মালিক পক্ষের এক প্রতিনিধি জানান, বিষয়টি নিয়ে প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু এ দিন প্রশাসন বা শ্রম দফতরের কর্তারা কেন বাগানে গেলেন না? বিষয়টি নিয়ে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক ফোন ধরেননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রম দফতরের এক আধিকারিক জানান, ঢেকলাপাড়া চা বাগান নিয়ে আইনি কিছু জটিলতা এখনও রয়েছে। এ দিন বাগানে গিয়ে বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, “আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাই বাগানে গিয়েছি। আমি চাই বাগান সুষ্ঠু ভাবে চলুক।” বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন ইউটিইউসি-র ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোপাল প্রধান বলেন, “আমরাও চাই বাগান ঠিকঠাক চলুক। কিন্তু সরকারি ভাবে বাগান এ দিন খুলে গেল, সেটা বলা যাবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন