Chopra

একসঙ্গেই আত্মঘাতী? চোপড়ার কিশোর-কিশোরীর মৃত্যুতে বাড়ছে রহস্য

পুলিশ এবং প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, সম্পর্কের টানাপড়েনেই ওই কিশোর-কিশোরী একসঙ্গে প্রাণ দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৫:০৬
Share:

এই অ্যাপার্টমেন্ট থেকেই ঝাঁপ দেন রামকিশোর কেজরীবাল। নিজস্ব চিত্র।

কী পাওয়া গিয়েছে মেয়েটির মোবাইল ফোন থেকে? ছেলেটির ফোনের সিম বা সাইকেলই গেল কোথায়? কেন মেয়েটির দেহ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরে মিলল ছেলেটির দেহ? চোপড়ায় দুই রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমে এই প্রশ্নগুলিই খতিয়ে দেখছিল ইসলামপুর জেলা পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একের পর এক সুতো খুলে তারা পৌঁছে গিয়েছে তদন্তের শেষ প্রান্তে। পুলিশ এবং প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে, সম্পর্কের টানাপড়েনেই ওই কিশোর-কিশোরী একসঙ্গে প্রাণ দিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

ইসলামপুর পুলিশ জেলার এসপি সচিন মক্কারও বুধবার জানান, চোপড়ায় জোড়া মৃত্যুর তদন্ত শেষের দিকে। তিনি বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিলেছে। তাতে অনেক তথ্যই উঠে এসেছে। এক-দু’দিনের মধ্যে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে বলা সম্ভব হবে।’’

পুলিশের সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে, এই ঘটনার শুরু এপ্রিলের প্রথম দিকে। সেই সূত্রের কথা অনুযায়ী, ওই সময়ে কিশোরীর মোবাইল ফোন ঘেঁটে কয়েকটি মেসেজ দেখতে পান তার মা। তাতে উৎকণ্ঠিত পরিবার মেয়েটিকে লকডাউনের মধ্যেই কোনওভাবে ব্যবস্থা করে শিলিগুড়িতে দিদির বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। জুলাইয়ের গোড়ায় বাড়ি ফেরে মেয়েটি। কিছু দিনের মধ্যে তার মোবাইল ফোন সে ফিরে পায়।

Advertisement

মৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার আগের দিন মেয়েটি ছেলেটিকে রাত ১১টা ৬ মিনিটে মেসেজ করে একসঙ্গে পালিয়ে যেতে বলে। আরও বলে, পালানো সম্ভব না হলে একসঙ্গে বিষ তো খেতে পারে তারা। তদন্তে জানা গিয়েছে, মেয়ের বাড়ির লোক ঘুমিয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ছেলেটি সম্ভবত সাইকেলে চেপে মেয়েটির বাড়িতে আসে। তার পরে তারা একসঙ্গে বেরিয়ে গিয়ে বসে, সম্ভবত চকোলেট খায়। তারা একসঙ্গেই বিষ খায় বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশ সূত্রে বলা হচ্ছে, মেয়েটির বাবা চা বাগানে কীটনাশক জোগানের ব্যবসা করেন। তাই বিষ পেতে দু’জনের অসুবিধা হয়নি। পুলিশের সূত্রটি জানাচ্ছে, দু’জনের দেহে একই বিষ মিলেছে।

তদন্তে পুলিশের আরও ধারণা, ভোর রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটির পরিজনেরা দু’টি দেহই দেখতে পান। তখনই কেউ সম্ভবত ছেলেটির দেহ নয়ানজুলিতে ঠেলে দেয়, দাবি পুলিশের। সেই সময় পরিবারের একটি সূত্র দাবি করেছিল, মেয়েটির আত্মীয় বিজেপির স্থানীয় পদাধিকারী। কিন্তু তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের সন্দেহ রয়েছে, সেই তথ্য কতটা সঠিক। মেয়েটির মা-ও জানিয়েছিলেন, তাঁরা কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত নন।

পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, ছেলেটির মোবাইলের সিম লোপাট, তার সাইকেলটি লুকিয়ে ফেলার মতো প্রমাণ নষ্ট ও লোপাটের অভিযোগ রয়েছে মেয়েটির পরিবারের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রটি জানিয়েছে, তদন্তের কাজ গুটিয়ে আনা হয়েছে। দ্রুত সকলকে তা জানানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন