নদীর জল কমেছে। ত্রাণ শিবিরও গুটিয়েছে। তবে কমেনি দুর্ভোগ। কোথাও জলের তোড়ে রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, কোথাও বা শুরু হয়েছে সাপের উপদ্রব। পেটের এবং চামড়ার নানা রোগের সংক্রমণও শুরু হয়েছে জেলায় জেলায়। নদীর জল যত কমছে ততই ভাঙছে নদীর পাড়। সব মিলিয়ে বন্যার পরেও ছাড়ছে না দুর্ভোগ।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের সুভাষগঞ্জ, শঙ্করপুর, সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যার জল নামতেই সাপের উৎপাত শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার ইটাহার থানার ধুসরগ্রাম এলাকায় সাপের ছোবলে এক বধূর মৃত্যু হয়েছে। রায়গঞ্জ ও ইটাহার ব্লকের বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে পেটের রোগ ও চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। বন্যার জলে বিভিন্ন এলাকায় নলকূপ ও মোটরচালিত পাম্পমেশিন ডুবে যাওয়ার কারণে জল দূষিত হয়ে পড়েছে। সেই জল খেয়েই পেটের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। শুধু রোগ ভোগ নয়, রায়গঞ্জ, ইটাহার, হেমতাবাদ, করণদিঘি, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের বহু রাস্তা, কালভার্ট ও সেতু ভেঙে গিয়েছে। তার জেরে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ডালখোলার দোমহনা সেতু-সহ পুর্ণিয়ামোড় এলাকার দুটি ফ্লাইওভারে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতেই জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন জায়গায় নদী ভাঙন সমস্যা প্রকট হয়ে দাড়িয়েছে৷ মালবাজারের চাপাডাঙায় তিস্তা নদীর ভাঙন অনেকদিন ধরেই চলছে৷ কিন্তু এ বারের বন্যা পরিস্থিতির পর নদীর জল নামতেই সেই ভাঙন পরিস্থিতি আরও বেড়ে গিয়েছে৷ স্থানীয় পশ্চিম সাঙ্গোপাড়া এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মৃণাল রায় জানান, পশ্চিম সাঙ্গোপাড়া ও দক্ষিণ সাঙ্গোপাড়া এলাকায় দুই শতাধিক পরিবার এই মুহূর্তে রাস্তার দুধারে শিবির করে রয়েছে৷
এ ছাড়াও বাসুসুবা এলাকায় বেশ কিছু পরিবার এখনও বাধের ওপর আশ্রয় নিয়ে রয়েছে৷ যদিও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, এই পরিবারগুলির বেশিরভাগই গত বছর থেকে বাধের ওপরে রয়েছেন৷ এছাড়াও ময়নাগুড়ি ও রাজগঞ্জ ব্লকেও নদীভাঙন চলছে৷ প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছে, ভাঙন পরিস্থিতি সামাল দিতে সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে৷ সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদের বলা হয়েছে৷