কেউ বললেন সীমান্ত এলাকায় হয়রানির অভিযোগের প্রসঙ্গ, কেউ বা আবার বললেন পানীয় জলের অভাবে এলাকার শিক্ষাকেন্দ্রে মিড ডে মিল বন্ধের কথা। প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের কাছে পেয়ে নানা সমস্যার কথা এ ভাবেই তুলে ধরলেন কোচবিহারের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তালিকায় সীমান্তের নাগরিকদের হয়রানি থেকে এলাকার বেহাল রাস্তা, পানীয় জল, সরকারি প্রকল্পের কথা না জানা থেকে কর্মসংস্থানের অভাবের মতো নানা অভিযোগের কথাও জানিয়ে প্রতিকারের আর্জি জানান তাঁরা। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ‘পঞ্চায়েতে প্রশাসন’ কর্মসূচির এটাই ছিল সংক্ষিপ্ত মার্কসিট। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই বাসিন্দাদের আরও কাছে প্রশাসনকে পৌঁছে দিতেই ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কিছু বিক্ষিপ্ত সমস্যার কথা বাসিন্দারা জানিয়েছেন। দ্রুত ওই সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ওই কর্মসূচি অনুযায়ী প্রশাসনের কর্তারা তিন মহকুমার গ্রামে যান। মেখলিগঞ্জের সীমান্ত এলাকা ভোটবাড়ি ও নিজতরফ এলাকায় উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এলাকার পানীয় জলের সমস্যার কথা তুলে ধরেন শাহিন আলি সরকার। একশো দিনের কাজে দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সোমারু রায়। এছাড়া সীমান্ত এলাকার সমস্যা, বিপিএল তালিকা নিয়ে অসন্তোষের মতো একাধিক সমস্যা তুলে ধরেন গ্রামবাসীরা। ভোটবাড়িতে আলোচনার সময় বিএসএফ কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
তুফানগঞ্জের মারুগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রথম দিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক অভিজিৎ ভট্টাচার্য। মাথাভাঙার শীতলখুচিতে যান অতিরিক্ত জেলাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি। দু’টি সাবেক ছিটমহল ঘুরে দেখেন তিনি। তাঁদের কাছে সমস্যার কথা তুলে করেন বাসিন্দারা। মারুগঞ্জের রাজু সরকার বলেন, ‘‘ভেলাকোপা থেকে ছাতোয়া যাতায়াতের প্রায় তিন কিমি রাস্তা বেহাল।’’ রিঙ্কু আলির অভিযোগ, ‘‘পানীয় জলের সমস্যায় মিড ডে মিলের রান্নাই বন্ধ রয়েছে।’’
প্রশাসনের মতে, সরেজমিনে গ্রাম ঘুরে পঞ্চায়েত স্তরের বাসিন্দাদের সমস্যার হাল হকিকত জানতে ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, যার পোশাকি নাম, ‘পঞ্চায়েতে প্রশাসন’। কোচবিহার জেলায় মোট গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ১২৮টি। ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চলতি নভেম্বর মাসের মধ্যে আধিকারিকরা যাবেন। ওই কাজে জেলা স্তরের আধিকারিকদের পাশাপাশি মহকুমা স্তরের পদস্থ কর্তারা থাকছেন। সরেজমিন এলাকা ঘুরে তাঁরা জেলাশাসকের কাছে রিপোর্ট দেবেন। সেই রিপোর্ট দেখেই পদক্ষেপ করা হবে। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, প্রশাসনের সঙ্গে আম জনতার যোগাযোগ বাড়বে।