পূজিতা: বলাইচণ্ডী দুর্গা। হেমতাবাদে।— নিজস্ব চিত্র।
দশমীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের পরে যখন চারদিকে বিষাদের সুর, পরের বছরের পুজোর জন্য বাঙালীর অপেক্ষা শুরু, ঠিক তখন থেকেই বলাইচণ্ডী দুর্গাপুজোয় মাতলেন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ ব্লকের খাদিমপুর এলাকার বাসিন্দারা। শনিবার দশমীর রাত থেকে প্রাচীন রীতি মেনে ওই পুজো শুরু হয়েছে। চলবে আজ, সোমবার পর্যন্ত।
পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা নির্মল বর্মনের দাবি, চার দিন পুজোয় মেতে থাকার পরে দশমীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন হয়ে যাওয়ার পর এলাকার বাসিন্দাদের মন ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই বাসিন্দাদের মধ্যে আরও কয়েকদিন পুজোর আনন্দের রেশ বজায় রাখতে প্রায় ২৫০ বছর আগে এলাকারই কিছু বাসিন্দা বলাইচণ্ডী দুর্গাপুজো শুরু করেন। সেই থেকে আজও প্রাচীন রীতি মেনে দশমীর রাত থেকে পুজো শুরু হয়। প্রতি বছর দুই দিনাজপুরের বহু মানুষ এই পুজোয় সামিল হয়ে পুজো ও অঞ্জলি দেন। কুশমণ্ডি এলাকার বাসিন্দা বুলটি রায়, রায়গঞ্জের বাসিন্দা নমিবালা রায়, স্থানীয় রুমটি রায়, সাধনা রায়রা রবিবার পুজো দিতে বলাইচণ্ডী দুর্গামন্দিরে গিয়েছিলেন! তাঁদের কথায়, ‘‘এই পুজো আমাদের রীতির অঙ্গ। এই পুজোকেই আমরা নিজেদের পুজো বলে মনে করি।’’
খাদিমপুর এলাকার ২৫০ পরিবারের সদস্যরা একজোট হয়ে বলাইচণ্ডী দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন। পুজোর তিন দিন আগে থেকে এলাকার বাসিন্দা নিরামিষ খাবার খান। বলাইচণ্ডী দুর্গা প্রতিমার চারটি হাত। এই প্রতিমার সঙ্গে অসুর ও মহিষ না থাকলেও কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী ও সরস্বতী রয়েছে। দশমীর রাতে পুজো শুরু হওয়ার আগে প্রতিমার শরীরে প্রায় ২০ ভরি সোনা ও রুপোর অলঙ্কার পরানো হয়। পুজোর উদ্যোক্তা বিশ্বনাথ বর্মন, জীবন বর্মন ও প্রদীপ বর্মন জানিয়েছেন, পুজোর জন্য বাইরে থেকে চাঁদা তোলা হয় না। তিন দিন ধরে মেলা, নাটক ও জলসার আয়োজন করা হয়।