গোটা শহর যখন আলোয় মুড়ে থেকে, সেই সময় রাজবাড়ি যেন অন্ধকার হয়ে যায়। বাইরের থেকে ঘুরতে আসা মানুষ রাজবাড়ির সামনে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। এ বারে দুর্গাপুজোর সময় কোচবিহারের রাজবাড়িকে তাই আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলার দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
তাঁদের দাবি, রাজবাড়ি তো বটেই, প্রধান সড়ক থেকে সেখানে যাওয়ার রাস্তাও আলোকিত করা হোক। সামনেও রং-বেরংয়ের আলো দেওয়া প্রয়োজন। কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটর অরূপ মজুমদার বলেন, “রাজবাড়িকে ঘিরে বহু পর্যটক আসেন কোচবিহারে। তাঁদের আকৃষ্ট করতে আরও নানা পদক্ষেপ করা যেতে পারে। বড়দেবীকে ঘিরেও আরও আকর্ষণ বাড়ানো যেতে পারে।”
হেরিটেজ সোসাইটির সদস্যদের অনেকেরই আক্ষেপ, দেওয়ালির সময় মহীশূর প্যালেস সাজিয়ে তোলা হয়। বড় দিনে গোয়াতে একাধিক গির্জা সাজিয়ে তোলা হয়। সেখানে কোচবিহার প্যালেস নিয়ে কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “ওই প্যালেস পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের অধীনে। সেখানে তারাই সমস্ত কাজ করছে। তবে সেখানে আলো ও ধ্বনি একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের তরফে কোচবিহারের রাজবাড়িকে আলো ও ধ্বনির মাধ্যমে সাজিয়ে তোলার জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। রাজবাড়িকে আলোর পাশাপাশি রাজারানিদের কাহিনি অমিতাভ বচ্চনের কণ্ঠে তুলে ধরার কথা রয়েছে। ওই কাজে শীঘ্রই হাতে দেওয়া হবে। পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কোচবিহার রাজবাড়ির এক আধিকারিক জানান, রাজ্য সরকার একটি প্রকল্প নিয়েছে। তা হলে ওই অভাব মিটে যাবে।
সাধারণ বাসিন্দারা অবশ্য ওই প্রকল্পের জন্য আর দেরি করতে রাজি হচ্ছেন না। তাঁদের দাবি, ওই প্রকল্পের কথা দীর্ঘ দিন ধরে শোনা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে সেটা একটা সময়ের ব্যাপার। কিন্তু পুজোর সময় তো আলো দিয়ে এমনিতেই সাজানো যেতে পারে। যেখানে এক একটি পুজো মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হয়, সেখানে রাজবাড়ি সাজাতে অসুবিধে কোথায়।
অসমের এক বাসিন্দা অসীম চৌধুরী বলেন, ‘‘নানা জায়গায় নানা ক্লাব সংগঠনের তরফে পুজোর আয়োজন করা হয়। রং-বেরংয়ের আলো দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়। সেখানে সরকারি ভাবে উদ্যোগ নিলে রাজবাড়ি সাজাতে কতক্ষণ লাগবে। বরঞ্চ রাজবাড়িকে কোচবিহারের পুজোর আকর্ষণকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে।” মেখলিগঞ্জের এক বাসিন্দা সমীর সরকার বলেন, “আমরা প্রত্যেক বছর পুজোর সময় ঘুরতে যাই। রাতে রাজবাড়ির সামনে গিয়ে একটু হতাশ হয়ে পড়ি। তাই সেখানে আলোকিত করে জাঁকজমক করে তুললে আরও ভাল লাগবে।”