কোথাও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের প্রচার। কোথাও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দিয়ে রান্নার গ্যাসের প্রকল্পে ভারতবর্ষের কত মানুষ লাভবান হয়েছেন, সেই প্রচার। প্রশাসনিক অফিস থেকে পেট্রোল পাম্পগুলিতে এমন দৃশ্য হরদম চোখে পরে কোচবিহারে। রবিবার সন্ধ্যায় লোকসভা নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে চবিশ ঘণ্টার মধ্যে সেই সব হোর্ডিং, পোস্টার, ফেস্টুন সরিয়ে ফেলার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। আজ, সোমবার সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনের একটি দল ঘুরে ঘুরে সেই সব হোর্ডিং সরানোর কাজ করবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা জানান, সোমবার তিনি সর্বদলীয় বৈঠক করবেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের আইন মেনে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সব নেওয়া হবে।”
এ বারে কোচবিহারে ভোটের লড়াই মূলত ত্রিমুখী। রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে বিজেপি ও বামেদের লড়াই হবে। গত লোকসভা উপনির্বাচনে বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। তাই ধরে নেওয়া হচ্ছে, মূল লড়াই হবে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। বিরোধীদের অভিযোগ, জেলাশাসকের দফতর, মহকুমাশাসকের দফতর, পুরসভা থেকে শুরু করে ব্লক অফিস বা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসেও একাধিক হোর্ডিং বা ফেস্টুন টাঙিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে নানা প্রকল্পের তালিকা দেওয়া হয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধেও পেট্রোল পাম্প থেকে শুরু করে নানা কেন্দ্রীয় অফিসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দিয়ে একই ভাবে প্রকল্পের তালিকা টাঙিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ।
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “যে হোর্ডিংয়ে মানুষকে জানার সহায়তা করার জন্য শুধু তথ্য রয়েছে তা সরানোর প্রয়োজন নেই। বাকি যেখানে মনে হচ্ছে কারও পক্ষে প্রচার হচ্ছে তা সরাতে হবে।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “সরকারে থাকার সুযোগ নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি নানা ভাবে সরকারি টাকা খরচ করে নিজেদের প্রচার করে যাচ্ছে। সবাইকে নির্বাচনী আইনবিধি মেনে চলতে হবে। দ্রুত আইন মেনে তা সরাতে হবে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “নির্বাচনী আইনবিধি মেনেই কাজ করা হয়। এক্ষেত্রে যারা অভিযোগ তুলছেন তারা না বুঝেই তুলছেন।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সবানেত্রী মালতী রাভাও বলেন, “নির্বাচনী বিধি মেনেই সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”