টংঘর ভেঙে চাল খেয়ে গেল দাঁতাল

মিড ডে মিলের চাল, ডালের লোভে বারবারই হানা দিচ্ছিল দাঁতাল। কিন্তু হাতি যাতে চাল ডাল সাবাড় করতে না পারে, সে জন্যে বনদফতরের উদ্যোগে স্কুল চত্বরেই পাকাপোক্ত টংঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০১:৪১
Share:

ভেঙে ফেলা টং ঘর। — নিজস্ব চিত্র

মিড ডে মিলের চাল, ডালের লোভে বারবারই হানা দিচ্ছিল দাঁতাল। কিন্তু হাতি যাতে চাল ডাল সাবাড় করতে না পারে, সে জন্যে বনদফতরের উদ্যোগে স্কুল চত্বরেই পাকাপোক্ত টংঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। খোদ বনমন্ত্রী সেই টংঘরের চাবি প্রধানশিক্ষকের হাতে তুলে দেন। কিন্তু মাত্র ৭ মাসের মধ্যেই সেই পাকা টংঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে মনের সুখে চাল, ডাল খেয়ে গেল দাঁতাল হাতি।

Advertisement

সোমবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের গরুমারা জাতীয় উদ্যান লাগোয়া লাটাগুড়ির বিছাভাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ডুয়ার্সের যে স্কুলগুলোতে সব থেকে বেশির হাতির উপদ্রব হয়, তার মধ্যে বরাবরই উপরের দিকে রয়েছে বিছাভাঙার এই প্রাথমিক স্কুলটি। বছরে গড়ে পাঁচ থেকে ছ’বার হাতির হামলায় জেরবার হতে হয় স্কুলটিকে। বিছাভাঙা বনবস্তির বাসিন্দাদের ছেলে মেয়েদের একমাত্র এই প্রাথমিক স্কুলটির মিড ডে মিলের চাল যাতে হাতির নাগালের বাইরে রাখা যায়, তার জন্যে বন দফতরের আধিকারিকেরাই চিন্তাভাবনা করে চারটি মোটা পিলার দিয়ে ১২ ফুট উচ্চতার টংঘর তৈরি করেছিলেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার সরকার বনদফতরের এই নির্মাণ কাজে আশ্বস্তও হয়েছিলেন। কিন্তু গরুমারার দাঁতালের কাছে যে কিছুই অসম্ভব নয়, সেটা প্রমাণ করতেই যেন চার পিলারের টংঘর গুড়িয়ে দিয়ে গেল দাঁতাল হাতি।

টংঘরে মজুত ছিল স্কুল লাগোয়া একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ১৮ কেজি ডাল এবং স্কুলের দু’বস্তা চাল। টংঘরকে মাটিতে মিশিয়ে চেটেপুটে সবটাই খেয়ে ফেলে দাঁতাল। গত সপ্তাহেও স্কুলে এই দাঁতালটিই হামলা চালিয়েছিল। সে বারে স্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষের দেওয়াল ভেঙে দেয়। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ছ’বার হামলা চলেছে। প্রধান শিক্ষক সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘আগের ভাঙা ঘর সারাই করতে বারবার বনদফতরের কাছে ছুটছি। এখন আবার টংঘরটিই গুড়িয়ে গেল স্কুলটা আদৌ রক্ষা করা যাবে কি না এখন তো সেই আশংকাতেই রয়েছি।’’ উদ্বেগে রয়েছেন অভিভাবকেরাও। ঝুনু ওঁরাও নামের এক অভিভাবক জানালেন, প্রতি মাসে স্কুল ভাঙছে দাঁতাল। স্কুল চত্বরে যাতে ক্যাম্প করে বনকর্মীরা রাত পাহারা দেন, সেটাই এখন তাঁরা চাইছেন। অনেক অভিভাবকেরা আবার স্কুলের চারদিকে চওড়া করে পরিখা কাটার কথাও ভাবছেন। তবে মজবুত টংঘর ভেঙে ফেলার ঘটনায় অবাক হয়ে গিয়েছেন বন্যপ্রাণ উত্তর মন্ডলের বনপাল সুমিতা ঘটক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত মজবুত করে টংঘর তৈরি করেছিলাম, তা সত্ত্বেও দাঁতাল হাতি সেটা ভেঙে ফেলায় আমরা হতবাক। এখন কী ভাবে স্কুলটিকে বাঁচানো যায় সেটি আমরা ভেবে দেখছি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন