তরাইয়েও রেলে প্রাণ যাচ্ছে বুনোর

ডুয়ার্সের পর এবার তরাই এলাকাতেও ট্রেনের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর ঘটনা, ঘটতে শুরু হয়েছে বলে দাবি বন দফতরের কর্তাদের। গত ৯ অগস্ট নকশালবাড়ির হাতিঘিসার রেল সেতুতে লাইনের ধার থেকে একটি পূর্নবয়স্ক চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৩:০২
Share:

প্রাণঘাতী: ট্রেনের ধাক্কা। মৃত চিতাবাঘ। নিজস্ব চিত্র

ডুয়ার্সের পর এবার তরাই এলাকাতেও ট্রেনের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর ঘটনা, ঘটতে শুরু হয়েছে বলে দাবি বন দফতরের কর্তাদের। গত ৯ অগস্ট নকশালবাড়ির হাতিঘিসার রেল সেতুতে লাইনের ধার থেকে একটি পূর্নবয়স্ক চিতাবাঘের দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

বন দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি চিতাবাঘটির ময়নাতদন্ত, এলাকার নমুনা পরীক্ষা এবং অফিসারদের পূর্নাঙ্গ রিপোর্ট দফতরে জমা পড়েছে। তাতে স্পষ্ট, সজোরে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে গিয়ে চিতাবাঘটির মেরুদন্ড, হাত-পা, কোমড়ের হাড় ভাঙে। শরীরের ভিতরে রক্তক্ষরণ হয়। ভোর ৪টার পর কোনও ট্রেনে ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। ঘটনার আগের রাতে ১২টা ছাড়া ভোর ৪টেয় বিহারের একটি ট্রেন ওই রুটে গিয়েছিল। বন কর্তারা নিশ্চিত, ভোরে ট্রেন দেখেও সেতু থেকে কোনও কারণে পালাতে পারেনি বুনোটি। আবার সেতুর প্রায় ২০ ফুট নীচে ডোবায় লাফ দিতেও সাহস পায়নি চিতাবাঘটি। হালকা অন্ধকার এবং ছোট প্রাণী হওয়ায় ট্রেনের চালকও ধাক্কাটা খেয়াল করতে পারেননি। এ ছাড়া, ট্রেন দেখে কামরার গায়েই লাফ দিয়ে ধাক্কা খেয়েও ছিটকে পড়তে পারে চিতাবাঘটি। কারণ, ইঞ্জিন বা চাকার অংশ ধাক্কা খেলে বুনোটির শরীর ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যেত।

কার্শিয়াঙের ডিএফও (বন্যপ্রাণ) সন্দীপ বেরওয়াল জানান, তরাই-এর ওই এলাকাটি দিনদিন ডুয়ার্সের মত বন্যপ্রাণীদের জন্য স্পর্শকাতর হয়ে উঠছে। গত বছর চেঙ্গা নদীর সেতু এবং রেল লাইনের ধার থেকে একটি দাঁতাল হাতির দেহ মিলেছিল। সেটিও মালগাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছিল। এ বছর চিতাবাঘটি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গিয়েছে বলে তাঁদের অনুমান। আগামী দিনে সতর্কতার জন্য রেলের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকও করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘মালগাড়ি, যাত্রীবাহি গাড়ির গতিবেগ ওই এলাকায় নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিশেষ করে নকশালবাড়ির ৪-৫ কিলোমিটার হাতির করিডর হিসাবে পরিচিত।’’

Advertisement

তরাই-এর ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি চা বাগান রয়েছে। সেখানে হাতি এবং চিতাবাঘের গতিবিধি বেশি। ওই রুটে শিলিগুড়ি জংশন, নকশালবাড়ি, আলুয়াবাড়ি, কাটিহারের মধ্যে প্যাসেঞ্জার ট্রেন, মালগাড়ি চলে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এডিআরএম পার্থপ্রতীম রায় বলেন, ‘‘বন দফতরের চিঠি এখনও পাইনি। বিষয়টি দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন