গেরগেন্দায় ভাঙন, আতঙ্ক ফালাকাটায়

গত এক দশক ধরে ভাঙনের সমস্যায় জেরবার ফালাকাটার জটেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের দলগাঁও। ওই এলাকায় গেরগেন্দা নদীর ভাঙনে তীব্র অসুবিধার সম্মুখীন বাসিন্দারা।

Advertisement

রাজকুমার মোদক

ফালাকাটা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৭:৩৫
Share:

শুরু হয়েছে নদীর ভাঙন। — নিজস্ব চিত্র

গত এক দশক ধরে ভাঙনের সমস্যায় জেরবার ফালাকাটার জটেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের দলগাঁও। ওই এলাকায় গেরগেন্দা নদীর ভাঙনে তীব্র অসুবিধার সম্মুখীন বাসিন্দারা। সেই সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে গত তিন বছর ধরে। তবুও প্রশাসনিক স্তরে কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

Advertisement

এবার বর্ষা শুরু হতে না হতেই ফের যেভাবে গেরগেন্দা নদীর পাড় ভাঙছে তাতে দুর্গতির কথা ভেবে শঙ্কিত ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কিছু বছরে এলাকার ১০০টিরও বেশি বাড়ি নদী ভাঙনের ফলে সরিয়ে নিতে হয়েছে। নদী ভাঙনের ফলে দেড়’শ হেক্টরের উপর কৃষি জমি এখন নদী গর্ভে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছর ধরেই সাংসদ, বিধায়ক, সেচ ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের সব জানানোর পরেও তাঁরা উদাসীন রয়েছেন। এখন নতুন করে ফের ভাঙনের মুখে রয়েছে প্রায় পনেরোটি বাড়ি। ভাঙনের সঙ্গে গ্রামবাসীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে হাতির তাণ্ডব।

দলগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, “গেরগেন্দা নদীর ভাঙন বন্ধ করার জন্য জনপ্রতিনিধি, সেচ ও প্রশাসনিক সব স্তরেই দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করে আসছি। সেচ দফতরের আধিকারিক ও ফালাকাটার বিধায়ক ভাঙন দেখে গেলেও কেউ কোনও ব্যবস্থা নিল না।”

Advertisement

ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারী বলেন, “গেরগেন্দার ভাঙন চিন্তার বিষয়। আমি এলাকায় গিয়েছি। অবিলম্বে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কিছু দিন আগেই সেচ মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় শিলিগুড়িতে সেচ দফতরের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নদী ও বাঁধ ভাঙন নিয়ে মিটিং করেছেন। প্রতিনিধির মাধ্যমে গেরগেন্দা-সহ ব্লকের নদী ভাঙনের একটি তালিকা সেচ মন্ত্রীকে তিনি দিয়েছেন বলে জানান অনিলবাবু।

ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা গেরগেন্দা নদীতে শীতকালে জল প্রায় থাকেই না। সেই আপাত শান্ত নদীই বর্ষা শুরু হলে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। ডুয়ার্সের বীরপাড়া বা পাহাড়ের দিকে এই গেরগেন্দার নাম হয়েছে পাগলি নদী।

আগেই যাঁরা গেরগেন্দার ভাঙনে জমি বাড়ি হারিয়ে ফের ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন সেই বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা আর কতবার ভিটে, বাড়ি নিয়ে উচ্ছেদ হব? জায়গা জমি সব গেল । কেউ দিন মজুরি করে, কেউ নদীতে পাথর ভেঙে সংসার চালায়।’’

এই বিষয়ে ফালাকাটার বিডিও স্মিতা সুব্বা বলেন, “গেরগেন্দার ভাঙন নিয়ে সঠিক তথ্য আমার জানা নেই। তবে আমি শুনেছি ভাঙনের কথা।’’ সেচ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে দ্রুত ভাঙন রোধ করা যায় তার ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন