উদ্যাপন: কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের পরে তৃণমূল কর্মীদের উল্লাস মালদহ শহরে। নিজস্ব চিত্র
শুভেন্দু অধিকারীর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার মালদহ জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হল। তবে দলের জেলা পর্যবেক্ষকের গোপন খামের তালিকাতেও দ্বন্দ্বের ছায়া সেই রয়েই গেল তৃণমূলে। এ দিন শুভেন্দুর তালিকা মেনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিনা ভোটাভুটিতে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ স্থির হয়েছে। কিন্তু ওই তালিকা যে সকলকে খুশি করতে পারেনি, তা এ দিনই স্পষ্ট হয়ে যায়।
ন’জনের মধ্যে ছ’জন কর্মাধ্যক্ষই উত্তর মালদহ থেকে মনোনীত হওয়ায় জল্পনা বেড়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি দু’টি পদই গিয়েছিল দক্ষিণ মালদহে। তা নিয়ে তৃণমূলের উত্তর মালদহের নেতৃত্ব রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তবে এ দিন ছয় জন কর্মাধ্যক্ষই হলেন উত্তর মালদহ থেকে। রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা, আসন্ন লোকসভা ভোটে কি উত্তর মালদহ আসনটিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল? যদিও দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘জেলার ব্লকগুলির ভারসাম্য বজায় রেখেই জেলা পরিষদের পূর্ণাঙ্গ বোর্ড গঠন করা হল। দলে ক্ষোভ নেই।’’
এ দিন সকাল ১১টা থেকে সভা শুরু হয়ে গেলেও শুরুতে সভায় আসেননি জেলা পরিষদের ২৭ নম্বর আসনে জয়ী হওয়া শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পদের অন্যতম দাবিদার স্বপনকুমার মিশ্র। কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন পর্বের একেবারে শেষ দিকে তিনি সভাঘরে ঢুকে শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই বেরিয়ে যান। জেলা পরিষদের ২৬ নম্বর আসনে জয়ী অর্চনা মণ্ডলকেও সভা চলাকালীন সভাঘরে দেখা যায়নি। নির্বাচন পর্ব মেটার অনেক পরে তাঁকে দেখা গিয়েছে সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের চেম্বারে গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে। সেই সময় সেখানে দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন থেকে শুরু করে একাধিক নেতাও উপস্থিত ছিলেন। অর্চনা কারও সঙ্গেই কোনও কথা না বলে বেরিয়ে যান। দলীয় সূত্রেই খবর, পদ না পেয়ে একাধিক দলীয় সদস্য ব্যাপক ক্ষুব্ধ। যদিও সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ অবশ্য দেখা যায়নি।
কর্মাধ্যক্ষদের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে শুভেন্দু খামবন্দি করে পাঠান সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের হাতে। জেলা পরিষদের কার্যনির্বাহী আধিকারিক অরুণকুমার রায় বলেন, ‘‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ন’জন কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন। জনস্বাস্থ্যে পায়েল খাতুন, পূর্ততে সামসুল হক, কৃষিতে রফিকূল হোসেন, শিক্ষায় প্রতিভা সিংহ, শিশু ও নারীকল্যাণে মর্জিনা খাতুন, বনভূমিতে পিঙ্কি সরকার মাহাতো, খাদ্যতে কেতাবুদ্দিন শেখ, মৎস্যে সরলা মুর্মু এবং বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ হয়েছেন চম্পা মণ্ডল।’’