মেঘলাল। ফাইল চিত্র
গরুমারা জাতীয় উদ্যানের বিশ্বস্ত কুনকি হাতি মেঘলালের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ গরুমারার পিলখানাতেই মৃত্যু হয় মেঘলালের। বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণেই তার মৃত্যু বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
মেঘলাল নেই, এই খবর শুনে শিশুর মতো চোখের জল ফেলেছেন মেঘলালের মাহুত টিহু কাওয়ার, প্রকাশ ওঁরাওরা। গরুমারার দক্ষিণ রেঞ্জের রেঞ্জার অয়ন চক্রবর্তীর চোখের কোণেও জল। তিনি বললেন, “মেঘলাল বয়সজনিত কারণে অসুস্থ ছিল, চিকিৎসাও চলছিল। তবে এ ভাবে আচমকা চলে যাবে ভাবিনি।” রবিবার রাতে সামান্য খেয়েছিল মেঘলাল। সোমবার সকালে আচমকাই দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থা থেকে পড়ে যায় আর তার কিছুক্ষণ পরেই নিথর হয়ে যায় সে।
২০০২ সালে অসম থেকে ডুয়ার্সের পথ দিয়ে একটি সংস্থা মেঘলালকে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে যাচ্ছিল। মালিকানা সংক্রান্ত নথি ঠিক না থাকায়, হাতিটিকে বাজেয়াপ্ত করে গরুমারাতে পাঠানো হয়েছিল। সেই থেকে মেঘলালের দ্বিতীয় ইনিংসের সূচনা। গরুমারার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধে হয়নি মেঘলালের। ২০১৩ সালে অবসর দেওয়া হয় মেঘলালকে। এর পর পিলখানায় তার দেখাশুনো চলত।
মেঘলালের মৃত্যুতে কার্যত মন ভাল নেই গরুমারার। বনাধিকারিক, বিটস্তরের বনকর্মী, পাতাওয়ালা, মাহুত, অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়া আধিকারিক সকলেই এই খবরে মনমরা। তার সবসময়ের সঙ্গী সূর্য, আমন, রামির মতো পিলখানার অন্য কুনকি হাতিদেরও এ দিন মেজাজ অত্যন্ত গম্ভীর বলে জানান মাহুতরা। গরুমারাতে ডিএফওর দায়িত্ব সামলে যাওয়া এক বনকর্তা জানান, “মেঘলালের ছিল রাজকীয় মেজাজ এবং সেইসঙ্গে ভীষণ বাধ্য, কোনও দিন নির্দেশের অন্যথা সে করেনি।”