প্রতীকী ছবি।
মালদহের কালিয়াচক থানার শেরশাহীর রুনুচক গ্রামে ধর্ষণকাণ্ডে নির্যাতিতা শিশুর কিশোর দাদা নিখোঁজ এবং পরবর্তীতে উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য দানা বেধেছে। মঙ্গলবার দুপুরে কালিয়াচকেরই বালিয়াডাঙা মোড় এলাকা থেকে তাকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিবারের লোকেরা। তারপরেই শিশুটিকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। পরিবারের দাবি, ছ’বছরের শিশুকে ধর্ষণ কাণ্ডে অন্যতম সাক্ষী ছিল ওই কিশোর। ফলে নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কিত রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাঁরা। যদিও পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জুন বিকেল পাঁচটা নাগাদ বাড়ির সামনে খেলা করছিল ওই শিশু। অভিযোগ, ওইদিন প্রতিবেশী এক কিশোর তাকে চকোলেটের প্রলোভন দিয়ে ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ওই কিশোর বেসরকারি মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে বলে দাবি পরিবারের। গত, ১৫ জুন কালিয়াচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা ওই শিশুর পরিবার। তবে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তদের পরিবারের তরফে হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। অভিযোগ, পুলিশও তদন্তে গড়িমসি করে। পরিবারের দাবি, পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারই করেনি। অথচ বলা হচ্ছে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
এখানে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ওই শিশুর পরিবার। ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও।
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ওই শিশুর বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর ছয় ছেলে মেয়ে রয়েছে। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ওই শিশুটি চতুর্থ। এর মধ্যে ওই শিশুর এক দাদা ঘটনায় অন্যতম সাক্ষী রয়েছে। গত, সোমবার সকালে বাড়ির সামনে খেলা করছিল। তারপর থেকে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যায়। দুপুর পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় খোঁজ শুরু করে দেন পরিবারের লোকেরা। আত্মীয়দের বাড়িতে না পেয়ে গ্রাম জুড়ে মাইকিং করে দেওয়া হয়। তারপরেও হদিশ মেলেনি ওই কিশোরের। পরে পরিবারের তরফে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। এ দিন সকালে ফের পরিবারের লোকেরা খোঁজ শুরু করে দেন। বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরে কালিয়াচকের বালিয়াডাঙা মোড় এলাকায় একটি বাঁশের মাঁচায় শিশুটিকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। তারপরেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।
পুলিশকেও জানানো হয় ঘটনাটি। ওই কিশোরের বাবা বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়ার পর ছেলে কারও সঙ্গে ঠিক মতো কথা বলছে না। আতঙ্কিত রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’ ছেলের নিখোঁজের পেছনে পুরোনো মামলাটি থাকতে পারেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
তাঁদের আইনজীবী তুহিন সবনমবলেন, “পুলিশি নিষ্ক্রীয়তার জন্য এমন ঘটনা ঘটছে। আমরা চাই পুলিশ ওই কিশোরের নিখোঁজের ঘটনা সঠিক ভাবে তদন্ত করে সত্য সামনে নিয়ে আসুক।’’ মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকার বলেন, ‘‘ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’