migrant worker

‘ফেরাতেও টাকা লাগবে’, দুশ্চিন্তায় শ্রমিক-পরিবার

পরিবার সূত্রে খবর, তাদের এক দূর-সম্পর্কের আত্মীয় মালদহের নালাগোলার নৃপেন বিশ্বাস কুয়েতে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে মালদহের পাকুয়ার দীপক সরকার নামে এক দালালের খোঁজ পায় এই পরিবার।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস 

গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:১৬
Share:

—প্রতীকী ছবি।

‘প্রচুর টাকা’ আয়ের আশায় সব বিক্রি করে ছেলেকে দুবাইয়ে পাঠিয়েছিলেন মা লক্ষ্মী সরকার। সঙ্গী হয়েছিলেন লক্ষ্মীর ছোট ভাই বিপ্লব সরকার। অভিযোগ, দালালদের ফাঁদে পড়ে দুবাই গিয়ে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন মামা-ভাগ্নে। কাছে নেই ফেরার টাকা। বাড়ি ফেরার কাতর আর্জি জানানোর ভিডিয়ো-বার্তা দেখার পর থেকেই প্রবল দুশ্চিন্তায় পরিবারের লোকজন।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে খোলা আকাশের নীচে মাটির উনুনে রান্না কর‍ছিলেন বিপ্লবের মা নিশারানি। চোখ মুছে বললেন, ‘‘এখানে কাজ নাই বাবা। কী আর করব! টাকার জন্যে বিদেশে গেল। এখন ফিরতে পারবে কি না ভগবানই জানেন।’’ গঙ্গারামপুরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাণগড় লাগোয়া পাড়ায় থাকেন নিশারানি। পুরসভা থেকে আবাস যোজনার ঘর পেয়েছেন। মাটি পর্যন্ত গাঁথনি হয়ে পড়ে রয়েছে। নিশারানির দুই ছেলের মধ্যে ছোট ছেলে মুম্বইয়ে শ্রমিকের কাজ করেন। বড় ছেলে বিপ্লবও গত বছর মুম্বইয়ে ছিলেন। নিশারানির মেয়ে লক্ষ্মীর ছেলে দেবাশিস বাড়িতেই ছিলেন।

পরিবার সূত্রে খবর, তাদের এক দূর-সম্পর্কের আত্মীয় মালদহের নালাগোলার নৃপেন বিশ্বাস কুয়েতে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে মালদহের পাকুয়ার দীপক সরকার নামে এক দালালের খোঁজ পায় এই পরিবার। তাঁকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে বিপ্লব ও দেবাশিসকে দুবাই পাঠানো হয়। চুক্তি ছিল, দুবাইতে শপিংমলে মাসে ভারতীয় মুদ্রায় ৪০ হাজার টাকা বেতনের কাজ দেওয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ, দুবাইয়ে যাওয়ার পরেই তাঁদের পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ দেওয়া হয়। তা কর‍তে না চাইলে আটকে রাখা হয়।

Advertisement

দেবাশিসের মা লক্ষ্মী বলেন, ‘‘পিক আপ ভ্যান, আমার গয়না বিক্রি করে ও ঋণ নিয়ে টাকা জোগাড় করে ওদের পাঠাই। ওরা সুস্থ ভাবে ফিরলে চিন্তামুক্ত হব।’’ দীপককে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। জবাব মেলেনি মেসেজের। এই পরিবারের পরিচিত নৃপেন বলেন, ‘‘আমি শুধু দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলাম। কথা মতো কাজও দেওয়া হয়নি। এখন ফিরিয়ে আনার কথা বললে বলেছে আরও টাকা লাগবে।’’ অসহায় এই পরিবার বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের দিকে তাকিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হচ্ছে। দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন