shamuktala

বুনো হাতি-ষাঁড়ের লড়াইয়ে নষ্ট কৃষিজমি

স্থানীয় সূত্রের খবর, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া ছিপরা এলাকায় প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে চলে বুনো হাতি ও ষাঁড়ের লড়াই। এলাকা দখলের লড়াইয়ে জয়ী হয় বুনো হাতিই।

Advertisement

হিতৈষী দেবনাথ

শামুকতলা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৫৮
Share:

এলাকা দখলের জন্য চলল জোর লড়াই। এক পক্ষ জিতল। অন্য পক্ষকে এক রকম বাধ্য হয়েই ছাড়তে হল ময়দান। তবে এর জেরে ক্ষতির মুখে এলাকার কৃষকেরা। গভীর রাতে বুনো হাতি আর ষাঁড়ের লড়াইয়ে নষ্ট হল কৃষিজমিতে কেটে রাখা ধান, একাধিক জমির আবাদ। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ কৃষক ও এলাকার বাসিন্দারা। জমির ফসলের পাশাপাশি, তাঁরা চিন্তিত গোয়ালঘরের গরুর নিরাপত্তা নিয়েও। বন দফতরের কর্তাদের অবশ্য আশ্বাস, এলাকায় নজরদারি রয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রের খবর, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া ছিপরা এলাকায় প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে চলে বুনো হাতি ও ষাঁড়ের লড়াই। এলাকা দখলের লড়াইয়ে জয়ী হয় বুনো হাতিই। তার পরে, বুধবার থেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে ষাঁড়টি। বন দফতরের কর্তাদের দাবি, হাতি ও ষাঁড়টি সুস্থ রয়েছে।

স্থানীয়েরা জানান, ছিপরার জঙ্গল থেকে বুনো হাতির দল প্রায় প্রতিদিন জঙ্গল লাগোয়া কৃষিজমিতে হানা দেয়। কৃষকেরা জমিতে টং-ঘর তৈরি করে নজর রাখেন, ফসল রক্ষা করেন। মঙ্গলবার রাতে দু’টি হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে কৃষিজমিতে হানা দেয়। কৃষকেরা হাতি দু’টিকে দেখে টর্চ জ্বালাতেই দেখেন, একটি পূর্ণবয়স্ক ষাঁড় একটি হাতির দিকে তেড়ে গিয়ে লড়াই শুরু করেছে। দেড় ঘণ্টার লড়াইয়ে কার্যত ঘুম ছোটে এলাকাবাসীর। অবশেষে, হাতিটি শুঁড়ে পেঁচিয়ে ষাঁড়টিকে আছাড় মারে ধান খেতে। বেগতিক বুঝে তখন পিছু হটে ষাঁড়টি। অভিযোগ, এর জেরে এলাকার কৃষক ভজন দাসের জমিতে কেটে রাখা ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়। এ ছাড়াও, অনেকের ধানখেত, কপিখেত ও বিভিন্ন আনাজ নষ্ট হয়। বুধবার সকাল থেকেই ষাঁড়টি এলাকা ছেড়ে যায় বলে খবর। তবে বুধবার রাতেও জঙ্গল থেকে প্রায় আটটি হাতির দল এসে কৃষিজমিতে হানা দেয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশের।

Advertisement

কৃষক ভজন দাস বলেন, ‘‘হাতি আর ষাঁড়ের এমন লড়াই কেউ কখনও দেখিনি! ছ’জন কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এলাকায় লাগাতার হাতির হামলা চলছে। যেমন যুদ্ধ হল, তাতে গোয়াল ঘরের গরু নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছি। আমরা চাই, বন দফতরের তরফে নজরদারি বাড়ানো হোক।’’

এক বনকর্তা জানান, একটি পূর্ণবয়স্ক হাতির ওজন প্রায় পাঁচ টন আর সমবয়সী ষাঁড়ের ওজন প্রায় ১,০০০-১,২০০ কেজি। হাতি অনেক উঁচু, শক্তিশালী, সঙ্গে রয়েছে শুঁড়। তাই লড়াইয়ে হাতির এগিয়ে থাকা স্বাভাবিক। ওই এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্লের (পূর্ব) বিভাগের উপ-ক্ষেত্র অধিকর্তা জিজু জেসপার বলেন, ‘‘হাতি এবং ষাঁড়ের লড়াইয়ের দু’দিন কেটে গিয়েছে। দু’টি প্রাণীই সুস্থ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা আবেদন জানালে, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।’’ অঙ্কন: কুনাল বর্মণ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন