Jalpaiguri

চাষের অঙ্কেই ফড়ে-নির্ভরতা

ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ব্লকে ব্লকে সরকার ধান কেনার শিবির করেছে। যে দামে সরকার কিনছে, তার থেকে কুইন্টালে প্রায় ছ’শো টাকা কম দিচ্ছে খোলাবাজার।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২২
Share:

—ফাইল চিত্র।

চাষের সাধারণ অঙ্ক মেলাতে গিয়েই ফড়ে-ব্যবসায়ীদের কাছে জলের দরে ধান দিতে হচ্ছে বলে দাবি জলপাইগুড়ির কৃষকদের একাংশের।

Advertisement

ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ব্লকে ব্লকে সরকার ধান কেনার শিবির করেছে। যে দামে সরকার কিনছে, তার থেকে কুইন্টালে প্রায় ছ’শো টাকা কম দিচ্ছে খোলাবাজার। তা হলে লোকসান করেও ফড়ে বা ব্যবসায়ীদের কাছে কেন? কৃষকদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে চাষের পাটিগনিতের গোড়ার কথা। খারিফের পরে রবিশস্য চাষ হয়। অর্থাৎ আমন ধান কেটে ঘরে তোলার পরেই শুরু হয়ে যায় রবি চাষ। যেমন আলু, কপি, লঙ্কার মতো আনাজ। কৃষকদের একাংশের আক্ষেপ, ধানে আর কতটুকু লাভ হয়। বছরে সংসারের খরচ ওঠে নবান্নের ধান-পরবর্তী চাষেই। তাঁদের কথায়, এই কৃষি ক্যালেন্ডারের নিয়ম মেনেই ফড়েদের কাছে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে। ধানের পরেই আলু চাষ শুরু। আলুর জমি তৈরিও শুরু হয়েছে। এখন বাজার দরে এক কুইন্টাল আলু বীজের দাম প্রায় সাত হাজার টাকা। যে কৃষকের মাত্র দু’বিঘে জমি চাষের জন্য প্রয়োজন অন্তত ৬ কুইন্টাল আলুবীজ। যার দাম ৪২ হাজার টাকা।

মানিকগঞ্জের বাসিন্দা প্রদীপ রায়ের কথায়, “জমির ধান বিক্রি না করলে এই টাকা আসবে কোথা থেকে? এ দিকে সরকারি কেন্দ্রে গেলে বলছে একমাস পরে আসুন। ততদিন বসে থাকলে আলু বোনার সময় পেরিয়ে যাবে।’’ জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে ঘুঘুডাঙায় ধান ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। তার কিছুটা দূরে একদিকে ঘুঘুডাঙা বাজার, অন্যদিকে মণ্ডলঘাট বাজার। দুই বাজারে গেলেই প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে ট্রাকের পর ট্রাক ধান বোঝাই হচ্ছে। কৃষক প্রদীপ রায়ের কথায়, “এ সবই আমাদের ধান। ব্যবসায়ীকে দিতে হচ্ছে। বাজারে এত কম দাম যে ক্ষতি হচ্ছে, চাষের খরচও উঠছে না কিছু করার নেই, শীতের চাষ তো করতে হবে। হাতে কিছু টাকা তো চাই।”

Advertisement

বুধবারও জেলার বিভিন্ন সরকারি বিক্রয় কেন্দ্রে ধান নিয়ে কৃষকেরা গেলে কোথাও দু’সপ্তাহ কোথাও বা একমাস পরে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক অমৃত ঘোষ দাবি করছেন, তিনি বিষয়টি দেখছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন