সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে ভর্তুকিতে পাওয়া পাম্পসেট প্রত্যাখ্যান করলেন চাষিরা। এই ঘটনায় রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েন মঞ্চে উপস্থিত পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী। চাষিদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে তিনি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে নেমে চলে যান বলে অভিযোগ। চাষিদের বক্তব্য, বিদ্যুত চালিত পাম্পসেটের বদলে পুরনো আমলের ডিজেল চালিত পাম্পসেট বিলি করা হচ্ছে দেখে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা অবশ্য বিষয়টি নিয়ে চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘চাষিদের জন্য আধুনিক ও উন্নতমানের সেচ পাম্পের ব্যবস্থা করা উচিত।’’ বুধবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বিডিও অফিস চত্বরে প্রকল্পের উপভোক্তা একদল চাষিকে সেচ পাম্প বিলির উদ্যোগ নিয়েছিল তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতি। উত্তরবঙ্গ সমবায় সেচ প্রকল্পে বালুরঘাট ব্লকের অধীন ১০ জন করে কৃষককে নিয়ে গঠিত ২৫টি সমবায়কে ২৫টি পাম্পসেট বিলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি পাম্পসেটের জন্য খরচ পড়ে ১ লক্ষ টাকা। এরমধ্যে সরকারি ভর্তুকি ৮০ হাজার টাকা এবং উপভোক্তা এক একটি কৃষক দলকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। অর্থাৎ একটি কৃষক দলের ১০জন সদস্যের প্রত্যেকে দিয়েছিলেন ২ হাজার টাকা করে।
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতে দলনেতাদের মঞ্চে ডেকে নিয়ে পাম্পসেটের কাগজপত্র তুলে দেওয়া শুরু হতেই ডাঙা অঞ্চলের এক চাষি অশ্বিনী বর্মন বেঁকে বসেন বলে অভিযোগ। মন্ত্রী ও পঞ্চায়েত সভাপতির সামনে তিনি জোড়হাত করে ওই পাম্পসেট প্রাপ্তির কাগজ নিতে অস্বীকার করে নেমে যান। পরে অন্য কৃষকেরাও বেঁকে বসেন। অশ্বিনীবাবু বলেন, ‘‘নতুন হলেও পুরনো কারিগরি দিয়ে তৈরি ওই পাম্পসেট আমরা বহু আগেই ব্যবহার করেছি। ওই পাম্প দিয়ে খুব কম এলাকায় জলসেচ দেওয়া যায়। ওই ধরণের পাম্পসেট অকেজো হয়ে এখনও আমাদের বাড়িতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।’’ অশ্বিনীবাবুর বক্তব্য শোনার পরেই মঞ্চের পেছনে সরে গিয়ে অন্য চাষিরাও ওই পাম্পসেট নিতে অস্বীকার করেন। তাঁদের দাবি, বিদ্যুত চালিত পাম্পসেটের বদলে পুরনো আমলের ডিজেল তেলে চালিত পাম্পসেট বিলি করা হচ্ছে দেখে তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা এই বিষয়ে চাষিদের পাশে দাঁড়ালেও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রায় অবশ্য বলেন, ‘‘অনেক চাষি ওই পাম্পসেট গ্রহণ করেছেন। তাছাড়া বিদ্যুতচালিত পাম্পসেট দেওয়া হবে তা কখনওই চাষিদের বলা হয়নি। একাংশ চাষি মার্শাল পাম্পসেটের দাবি করেন। কিন্তু প্রকল্পে যা বরাদ্দ হয়েছে, তার বাইরে আমরা অন্য পাম্পসেট দিতে পারবো না। ’’ বালুরঘাটের বিডিও শুভ্রজিত গুপ্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’’