বাজেয়াপ্ত: নেশার ওষুধ। নিজস্ব চিত্র
নেশার জন্য কাশির সিরাপ এবং ঘুমের ওষুধের পাচারে অভিযোগে বাবা ও ছেলেকে ধরল পুলিশ। অভিযুক্তরা দার্জিলিং পাহাড়, সিকিম-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে তা সরবরাহ করতেন বলে অভিযোগ। ধৃতদের বাড়ি এবং গুদামে অভিযান চালিয়ে ২২ লক্ষ টাকার সিরাপ ও ট্যাবলেট মিলেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ভক্তিনগর থানার হায়দারপাড়া এবং মধ্য শান্তিনগর এলাকার অভিযান চালান কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখার অফিসারেরা।
ধৃতদের নাম উত্তম সাহা ও কুশল সাহা। অভিযুক্তের ওষুধ বিক্রির পাইকারি লাইসেন্সও রয়েছে। কিন্তু খুচরা দোকানদারদের বদলে তারা বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের তা সরবরাহ করতেন বলে অভিযোগ। পাহাড় ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে নেশা করার জন্য ওষুধগুলি পাচার হতো। এ দিন পাচারের সময়ই পুলিশ অভিযান চালায়। ২১ মার্চ প্রধাননগরের চম্পাসারি থেকে দাউদ ইব্রাহিম ওরফে ডেভিড নামের কুখ্যাত মাদকের ব্যবসায়ীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। জেরায় সময় গোয়েন্দাদের ডেভিডই অভিযুক্ত বাবা ও ছেলের নাম জানান। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী সন্ধ্যায় গোয়েন্দা শাখায় গিয়ে মামলার সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, ‘‘ওষুধ ব্যবসার মধ্যেই অভিযুক্তরা জালিয়াতি করছিল।’’
গোয়েন্দারা জানান, মধ্য শান্তিনগরে গুদামটি পাইকারি ওষুধ রাখার জন্য ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্তদের বাড়ির পিছনের দিকে একটি অব্যবহৃত শৌচালয়ের হদিশ মিলেছে। তাতে কার্টনগুলি লুকিয়ে রাখা ছিল। বাইরে থেকে শৌচালয়ের মধ্যে এত ওষুধ রয়েছে তা প্রথমে বোঝা যায়নি। শৌচালয়টি খোলাতেই তা বোঝা যায়। ওষুধগুলির নথিপত্রও ঠিকঠাক নেই বলেই অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, পাহাড় এবং সিকিমে গাঁজা, হেরোইনের থেকেও কাশির সিরাপ এবং ঘুমের ওষুধ মাদক হিসাবে বেশি বিক্রি হয়। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশনের বদলে খোলা বাজারে নির্দিষ্ট এজেন্টদের মাধ্যমে তা চড়া দামে বিক্রি হয়। একাংশ পাইকারি ওষুধ ব্যবসায়ী সেগুলি সরবরাহ করেন বলে অভিযোগ। ভুয়ো খুচরো সংস্থার নামে বিল দেখিয়ে ওষুধগুলি মজুত করা হয়েছিল।
এ দিন গোয়েন্দা শাখার ইন্সপেক্টর সঞ্জয় ঘোষ-সহ অফিসারেরা খবর পেয়েই অভিযানে নামেন। ১০১টি কার্টনে ৪৬৮০টি সিরাপের বোতল ছিল। এ ছাড়াও ৮২ প্যাকেট দু’ধরনের ক্যাপসুল, ট্যাবলেট মিলেছে।