শোকস্তব্ধ: ছেলেকে কোলে নিয়ে বিচারের অপেক্ষায় রাজকুমার রায়ের স্ত্রী অর্পিতাদেবী। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
ছেলের দেহ পাওয়ার পরে শুক্রবার কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বাবা। শনিবার তিনিই চোয়াল শক্ত করে ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি করলেন। পাশাপাশি পুত্রবধূর চাকরির দাবিতে সরব হলেন মৃত ভোটকর্মী রাজকুমার রায়ের বাবা প্রিয়নাথ রায়।
অন্যদিকে রাজকুমার রায়ের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে শনিবার ফাঁসিদেওয়া মোড়ে সভা করেন ফাঁসিদেওয়া স্কুলের প্রাক্তন ছাত্ররা। সেখানে হাজির ছিলেন বিভিন্ন স্কুল শিক্ষকও। শনিবার দুপুরে রাজকুমারের সমাধিতে বেড়া লাগানোর কাজ চলছিল। সেই কাজের তদারকি করছিলেন প্রিয়নাথবাবু। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমার যা যাওয়ার তা গিয়েছে। কিন্ত, যাদের জন্য আমার ছেলের এই দশা হল তাঁদের আমি শাস্তি চাই। এর জন্য প্রয়োজনে আমি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়ে এই দাবি জানিয়ে আসব। ও তো নেই, এখন যারা আছে তাঁদের কী হবে।’’
মৃত শিক্ষকের পরিবার জানিয়েছে, শুক্রবার শেষকৃত্যের কাজ শেষ হতে রাত ১টা বেজে যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান বলে জানিয়েছেন রাজকুমারের স্ত্রী অর্পিতাদেবী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন দেহ নিয়ে আসছিলাম তখন মুখ্যমন্ত্রীর ফোন এসেছিল। সেসময় ভাল করে কথা বলতে পারিনি। আমি ওনার সাথে দেখা করতে চাই।’’
অর্পিতাদেবীর এক দাদা বিশ্বজ্যোতি রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ছেলেমেয়েদের ভাল স্কুলে রেখে পড়াশোনা করানোর ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা চাই, উনি যেন নিজে এই বিষয়ে দেখভাল করেন।’’ রাজকুমারের যা ঋণ রয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে তা মকুবের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন ফাঁসিদেওয়া মোড়ে যে পথসভা আয়োজিত হয় সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজকুমারের শিক্ষক কাজল দাস বলেন, ‘‘সরকার একটা খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইছে কেন, সেটা বোধগম্য হচ্ছে না। অবিলম্বে এই খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত করা প্রয়োজন।’’ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের আগেই এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বক্তাদের।