সজ্জিতা: বড়দেবী। নিজস্ব চিত্র
দ্বিতীয়াতেই উৎসবে মাতল কোচবিহার। অলঙ্কার পড়ানো হল বড়দেবীকে। তা দেখতে উপচে পড়ল ভিড়। দেবীবাড়ির সামনে বসেছে দোকানপাট। সন্ধ্যের পরেই চন্দননগরের আলোতে ভরে গিয়েছে চারদিক। খাগরাবাড়ি, শিবযজ্ঞ রোড থেকে শহরের ভিতরে রাজরাজেন্দ্র নারায়ণ রোড, হাজরাপাড়া, গাঁধীকলোনি সর্বত্র আলোর বাহার। শুক্রবার হালকা ভিড়ও হতে শুরু করেছে বড় মণ্ডপগুলিতে। বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, “সপ্তমীর দিন থেকে ভিড়ে ঠাসাঠাসি শুরু হবে। তাই এই সময় যখন সুযোগ পেয়েছি সবাই মিলে একটু ঘুরে নিচ্ছি।” কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “ইতিমধ্যেই দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করেছেন। মেলার দোকানপাটও বসে গিয়েছে।”
বছর কয়েক আগেও কোচবিহারে ষষ্ঠীর আগে তেমন ভাবে পুজো শুরু হত না। হাতে গোনা এক-দু’টি বড় পুজো একদিন আগে শুরু হতো। সেই ট্র্যাডিশন বদলেছে। বড় শহরগুলির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্বিতীয়া-তৃতীয়া থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে একাধিক পুজো। শিবযজ্ঞ রোডের বয়েজ ক্লাবের এ বার পঞ্চাশ বছর। ইতিমধ্যেই ওই পুজোর আলো ও মণ্ডপের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ক্লাবের সহকারী সভাপতি দুলাল ঘোষ জানান, তৃতীয়ার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হবে। তিনি বলেন, “পরীক্ষামূলক ভাবে আলো জ্বালানো হয়েছে। উৎসাহী দর্শনার্থীরা তার মধ্যেই ভিড় করছেন মণ্ডপের বাইরে।” বাজারের মাঠ পুজো কমিটির সম্পাদক সব্যসাচী দেবনাথ বলেন, “সবাই অপেক্ষায় থাকে। মন মানতে চায় না। তাই এক–দুদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো।”
দ্বিতীয়াতেই পুজো দেখতে বেরিয়েছেন শহরের বাসিন্দা বিল্লোল সরকার। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে টোটোয় চেপে একাধিক মণ্ডপে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “ষষ্ঠী থেকেই ভিড় হয় আমাদের শহরে। আগে তো সেই সময় বেরোতে হত। এখন একটু আগে থেকেই উৎসব শুরু হয়ে যাচ্ছে। প্রথম দিকে ভিড় কম থাকে। তাই বেরিয়ে পড়েছি।” আর এক বাসিন্দা নির্মল রায় অবশ্য জানান, যে কয়েক দিন শহর আলোয় সেজে থাকবে তিনি পরিবার নিয়ে প্রতিদিন বেরোবেন। তিনি বলেন, “এক বছর পরে উৎসব এসেছে। শহর সেজে উঠছে। ঘরে বসে থাকতে মন চায় না।” চিত্রশিল্পী শ্রীহরি দত্ত বলেন, “বড় শহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে আমাদের শহরও। সে কারণেই এখন পুজো শুরু হয়ে যাচ্ছে মহালয়ার পর থেকেই।”