বিধ্বংসী: আগুনে ছাই দোকান। পুন্ডিবাড়ি বাজারে। নিজস্ব চিত্র
বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল পুন্ডিবাড়ি বাজারের ৫০টি দোকান। সোমবার সকাল ছ’টা নাগাদ বাজারের একটি দর্জির দোকান থেকে প্রথম ধোঁয়া বের হতে দেখেন এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা। তাঁদের মুখ থেকে খবর ছড়াতেই ছুটে আসেন ব্যবসায়ীরা। ততক্ষণে আগুন ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। দাউদাউ করে আগুন ছড়াচ্ছে একের পর এক দোকানে। আগুনের তেজ এতটাই ছিল যে চোখের সামনে দোকান পুড়তে দেখেও অনেকেই মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার ঝুঁকি নিতে পারেননি। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাজারের একাংশ পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়।
ব্যবসায়ী সন্তোষ সরকার বলেন, “জামাকাপড়ের দোকান ছিল আমার। চোখের সামনে ছাই হয়ে গেল। জানি না কীভাবে সংসার চালাব।” আরেক ব্যবসায়ী ফজিউদ্দিন মিঁয়া বলেন, “আগুনের এত তেজ। কিছুই সরাতে পারলাম না।” খবর পেয়ে দমকলের ছ’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান দমকল কর্মীরা। তাঁদের প্রাথমিক অনুমান, ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক অঙ্ক ৫ কোটির টাকারও বেশি। শর্ট সার্কিট থেকে ওই দুর্ঘটনা বলে জানান তাঁরা।
কোচবিহার সদরের অন্যতম বড় এই বাজারে সব মিলিয়ে এক হাজারের বেশি দোকান রয়েছে। আগুনের খবর জানার পরে বাড়তি দমকল ইঞ্জিন যাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সে ব্যাপারে উদ্যোগী হন জেলাশাসক কৌশিক সাহাও। শেষ পর্যন্ত কোচবিহারের চারটি ইঞ্জিনের পাশাপাশি ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ার থেকে একটি করে ইঞ্জিন আনা হয়। কৌশিকবাবু বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে কী কী সাহায্য করা যায় দেখছি।” সকালেই বাজার পরিদর্শনে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘পুড়ে যাওয়া দোকান তৈরির ব্যাপারে দফতরের আধিকারিকদের প্রকল্প জমা দিতে বলেছি।”
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজার লাগোয়া চত্বরেই একটি দিঘি রয়েছে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সেটি ধুঁকছে। ফলে জলের ব্যবস্থা করতে শুরুতে দমকল কর্মীদের হিমসিম খেতে হয়। পরে অন্য একটি জলাশয় থেকে জল আনা হয়। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রবিরঞ্জন ভাদুড়ি বলেন,“ক্ষতিগ্রস্তদের স্বল্প সুদে ব্যাঙ্ক ঋণের পাশাপাশি একটি ভূগর্ভস্থ জলাধারের ব্যাপারেও আর্জি জানিয়েছি।”