প্রতীকী ছবি।
একদিকে গ্রেফতার হলেন ধর্ম পাসোয়ান। অন্যদিকে আগুন লাগল তাঁর বাড়িতে। বুধবার সকাল ন’টায় গলগল করে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায় ধর্মের একটি বাড়িতে। সেটি পুলিশ ‘সিল’ করে রেখেছিল। জলপাইগুড়ি শহরের জয়ন্তীপাড়ার এই বাড়ি যৌনব্যবসা পরিচালনার অন্যতম ‘কন্ট্রোল রুম’ ছিল বলে পুলিশের দাবি। তৃণমূল নেতা ধর্মের পানশালায় যৌনব্যবসা চালানোর মামলার তদন্তে এই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ডায়েরি ও বেশ কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিশ। বাড়িটিকে সিল করে, বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ।
এ দিন বাড়ির ভিতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন বাসিন্দারা। দরজার ‘সিল’ ভেঙে দমকল কর্মীরা ঢোকেন। একতলার ঘরে আগুন লেগেছিল বলে দমকল সূত্রের খবর। ধর্মকে গ্রেফতারের পরেই এই আগুন লাগার ঘটনা রহস্য তৈরি করেছে। পুলিশের একাংশের প্রশ্ন, কোনও প্রমাণ নষ্ট করতেই কী কেউ বাইরে থেকে ঢুকে আগুন লাগিয়েছে? ‘সিল’ করা বাড়িতে ভিতর থেকে কী ভাবে আগুন লাগবে সেই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। এ দিন পুলিশ পৌঁছনোর পরে বাসিন্দাদের একাংশ তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁদের দাবি, বাড়ির দোতলার ছাদের একটি দরজা খোলা ছিল। আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল এবং পুলিশ কর্মীরা দেখেছেন, দু’টি বড় সুটকেস খোলা অবস্থায় রয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার অভিষের মোদী বলেন, “কীভা বে ওই বাড়িতে আগুন লাগল তার জন্য পৃথক তদন্ত হচ্ছে। আমরা কোনও সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না।”
১৬ জুলাই জলপাইগুড়ির থানারোডের পানশালায় অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, পানশালার এক গায়িকা অভিযোগ করেন যে তাঁদের দিয়ে জোর করে যৌনব্যবসা করানো হত। অভিযান চালিয়ে এবং তারপরে পানশালার বেশ কয়েকজন কর্মীকে গ্রেফতার করলেও এতদিন পর্যন্ত পানশালার মালিক ধর্ম পাসোয়ান পলাতক ছিলেন। অভিযানের কয়েকদিন পরে মূল অভিযোগকারিনী দাবি করেছেন, তাঁকে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ লেখানো হয়েছে। যদিও তদন্তে নেমে পুলিশ দাবি করে, আর্ন্তজাতিক নারী পাচার চক্রের সঙ্গে ধর্মের পানশালার যোগ রয়েছে। মামলায় নতুন নতুন ধারা যোগ হয়। এ দিকে তৃণমূল পরিচালিত জলপাইগুড়ি পুরসভার সিংহভাগ কাজের বরাত ধর্মের রয়েছে। তা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ উঠেছে।
এ দিন দুপুরে ইসলামপুর আদালত থেকে ট্র্যানজিট রিমান্ড নিয়ে বের হওয়ার পথে ধর্মের মন্তব্য, “আমি এ সব কাজ করি না। আমাকে বিনা কারণে ফাঁসানো হয়েছে। এর পিছনে হোটেল ব্যবসায়ীর হাত আছে।”